বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের চিকিৎসা নেওয়ার তীর্থস্থান হলো বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল । অথচ এখানে চিকিৎসক, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, পানিসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। এক হাজার শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে করোনার সময়েও দিনে গড়ে প্রায় ১৪০০-১৫০০ রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এসব রোগীদের বর্হি বিভাগে ও আন্তঃবিভাগে চিকিৎসা দিতে মাত্র নিয়মিত ৯১ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এতে করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে।
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শেবাচিম হাসপাতালে ২২৪টি পদে চিকিৎসক আছেন মাত্র ৯১ জন। শূন্য পদ আছে ১৩৭টি। আর শিক্ষানবিশ চিকিৎসক রয়েছেন ১৬০ জন।
গেল অক্টোবর মাসে জরুরি বিভাগে ভর্তি হয়েছে ১০ হাজার ৮৩৯ রোগী। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির আগে গড়ে দিনে ১৭০০/১৮০০ রোগী ভর্তি হতো কিন্তু করোনার চলমান পরিস্থিতিতে রোগী সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৪শ থেকে দেড় হাজারে। যা এক বেডের অনূকুলে ৩৪ দশমিক ৬৪ ভাগ রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পটুয়াখালী থেকে আসা শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন (পুরুষ ) ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন শেখ কাফিল উদ্দিন বলেন, শনিবার (৩১ অক্টোবর ) বিকেলে ভর্তি হয়েছেন এখনো কোনো ডাক্তারের দেখা পাননি। তিনি বলেন, শুনেছি ডাক্তাররা আন্দোলন করছেন। রোববার ও সোমবার সকালে একজন ডাক্তার কয়েকজন নার্স নিয়ে এসে ভর্তি খাতা দেইখ্যা কোনো ওষুধ না লিখেই আবার চলে গেছে। এর চাইতে পটুয়াখালী হাসপাতালেই ভালো চিকিৎসা সেবা পাওয়া যেতো।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক মো. বাকির হোসেন জানান, দিনে দিনে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে । তবুও চেষ্টা করছি রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে। চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অবহিত করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে বর্তমানে নিয়মিত চিকিৎসক রয়েছে ৯১ জন, করোনাকালীন সময়ে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য যোগদান করেছে ৪০ জন এবং কয়েক দিনের মধ্যে আরও কিছু চিকিৎসক যোগদান করার কথা রয়েছে। এতে করে কিছুটা হলেও রোগীদের ভোগান্তি দূর হবে। চিকিৎসা সেবার মান আরও বাড়বে বলে আশাবাদী এই পরিচালক।