বরিশালের রুপাতলীতে গলাকাটা এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের ৩ জনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
নগরের রুপাতলী রেডিও সেন্টার সংলগ্ন দেয়ালঘেরা একটি জমির পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে শনিবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
কোতয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উদ্ধার হওয়া মৃত ৯ বছর বয়সী ইয়াসিন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ছগির হোসেনের ছেলে। ছগির ঢাকার মহাখালীতে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে থাকলেও ছেলে ইয়াসিন দাদী শিরীন বেগমের সঙ্গে বরগুনা সদরের বদরখালী ইউনিয়নের ফুলঝুড়ি গ্রামে থাকত।
নিউজবাংলাকে দাদি শিরীন বেগম জানান, নিজের চিকিৎসার জন্য গত সোমবার নাতি ইয়াসিনকে নিয়ে ঢাকা থেকে বরিশালের রুপাতলী এলাকায় বোন আলেয়া বেগমের বাসায় ওঠেন। কিন্তু সেখানে টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় টাকা যোগাতে বোনের সঙ্গে দিনমজুরের কাজ শুরু করেন তিনি।
টাকা যোগাড় হলে রোববার বরগুনায় ফিরে নাতিকে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করার কথা ছিল।
এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে নাতিকে বোনের বাসায় রেখে কাজে যান এবং দুপুরের মধ্যে ফিরে আসেন। এসে তাকে বাসায় না দেখে কোথায় গেছে জানতে চাইলে বোন আলেয়া জানান, ইয়াসিন বাহিরে গেছে।
এতে তিনি ধরে নেন, ইয়াসিন হয়ত খেলাধুলা করতে বাইরে গেছে। কিন্তু বিকেলেও ফিরে না আসায় আলেয়াসহ তার স্বামী সিরাজ ও ছেলে আলামিনকে নিয়ে তাকে খুঁজতে বের হন। এরপর সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও খোঁজ না পেয়ে তার ছেলে ছগির হোসেনেকে বিষয়টি জানান।
খবর পেয়ে ছগির ও তার বর্তমান স্ত্রী শনিবার সকালে বরিশাল আসেন। এরই মধ্যে নগরের রুপাতলী রেডিও সেন্টার সংলগ্ন দেয়ালঘেরা একটি জমিতে এক শিশুর মরদেহের খোঁজ পান তারা। সেখানে গিয়ে দেখেন পরিত্যক্ত একটি টয়লেটের ওপর ইয়াসিনের গলাকাটা দেহ পরে আছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, ‘শিশুটিকে যেভাবে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে তা লোমহর্ষক। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
‘প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুটির দাদির বোন আলেয়া, তার স্বামী সিরাজুল ইসলাম ও ছেলে আলামিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
কোতয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, ‘এটি হত্যাকাণ্ড নিশ্চিত। তবে বিস্তারিত তদন্তের পরেই বলা যাবে।’