গতকাল ২৫ মার্চ সোমবার বরিশাল সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে "নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতকরণ" বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতির নেতৃবৃন্দের কাছে ১৩ দফা দাবি পেশ করেন এসব দাবি ৭২ ঘন্টার মধ্যে কার্যকর করার আল্টিমেটাম দেন। ৭২ ঘন্টার মধ্যে কার্যকর না হলে বরিশালের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আবারো আন্দোলনে ফিরে যাওয়ার কথা বলেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মেয়র, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন বরিশাল, সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, বিভাগীয় কমিশনার বরিশাল, রাম চন্দ্র দাস। জেলা প্রশাসক বরিশাল, এস, এম, অজিয়র রহমান। অতিরিক্ত আইজিপি পুলিশ কমিশনার বরিশাল, মেট্রোপলিটন পুলিশ বরিশাল, মোশারফ হোসেন বিপিএম, ডিজিএফআইর পরিচালক, কর্নেল জিএম শরিফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার বরিশাল, মোঃ সাইফুল ইসলাম, বিপিএম (বার), উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বরিশাল মেট্রোপলিটন, মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁঞা, শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি, রুপাতলী বাস মালিক সমিতির সদস্যরা, নতুল্লাবাদ বাস মালিক সমিতিরসদস্যরা, সাংবাদিক, গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ শুক্রবার বরিশাল-বানারীপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে বাস ও মাহিন্দ্রার সংঘর্ষে বরিশাল বি এম কলেজ ছাত্রীসহ সাতজন নিহতের ঘটনায় বরিশালের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরবর্তীতে বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ'র দাবী মেনে নেয়ার আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ তুলে নেয়।
আজ শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে ১৩ দফা পেশ করেন তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হল।
১. থ্রিহুইলারে ড্রাইভার সহ ৪জন বহন করতে হবে এবং ড্রাইভারের দুইপাশে কোন যাত্রী নেয়া যাবে না।
২. সকল সময় সড়ক ও নৌ পথে কার্ডধারী শিক্ষার্থীদের থেকে হাফ ভাড়া নিতে হবে।
৩. বরিশালে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ৮ জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে এবং চিকিৎসার সকল ব্যয় বহন করতে হবে।
৪. নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল দ্রুততম সময়ের মধ্যে শহরের বাইরে স্থানান্তর করতে হবে।
৫. গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সময় ফুটওভার ব্রিজ স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে এবং নতুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ড ফুট ওভার ব্রিজ শিলা হালদারসহ অন্যান্য নিহতদের নামে নামকরণ করতে হবে।
৬. ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভার দের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৭. সড়ক ও মহাসড়ক সংলগ্ন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা এবং বাজারের আগে এবং পরে স্পিডব্রেকার ও জেব্রা ক্রসিং দিতে হবে।
৮. সড়ক ও মহাসড়ক সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে এবং অচল ক্যামেরা সমূহ প্রতিস্থাপন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সাথে এবং তাদের দাবির সাথে একমত পোষণ করেন অতিথিরা। অতিথিরা আশ্বাস প্রদান করেন ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবি পূরণ করা হবে, বাকি দাবিগুলো পূরণে তাদের সহযোগিতা কামনা করে এবং সব ধরনের আন্দোলন থেকে তাদের বিরত থাকার আহ্বান জানান অতিথিরা।