বরিশালে নানা আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপিত

:
: ৪ years ago

বরিশালে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় সংলগ্ন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

 

এর পরপরই বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক, বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান নির্বিঘœ এবং শান্তিপূর্ণ করতে শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা গ্রহণ করে পুলিশ।

 

সকাল ৯টায় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। পরে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীরা এখনও সক্রিয়।

 

এখনও তারা স্বাধীন দেশের স্থপতির ভাস্কর্য ভাঙ্গার দুঃসাহস দেখায়। তাদের অপতৎপরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ লড়াই চালিয়ে যাবে।
সকাল ১১টার দিকে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বরিশাল দক্ষিণ ও উত্তর জেলা এবং মহানগর বিএনপি।

 

পরে নগরীতে বিজয় র‌্যালি করে বিএনপি। এ সময় মহানগর বিএনপি’র সভাপতি এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
ভুলুণ্ঠিত। গণতন্ত্র এখনও সুদূর পরাহত। বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

 

এদিকে সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভে উপাচার্যের নেতৃত্বে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেন নকরে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।
সকাল ৯টায় বরিশাল সার্কিট হাউজ চত্বরে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. অমিতাভ সরকার।

 

এ সময় বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন এবং রেঞ্জ ও মেট্রো পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে বিজয় দিবসের কার্যক্রমের সূচনা করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. অমিতাভ সরকার। সকাল ১১টায় জেলা পুলিশ লাইনসে পুলিশের মুক্তিযোদ্ধা সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হয়।

 

এছাড়া বিজয় দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসনের হলরুমে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়াও সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে নানা আয়োজনে বরিশালে মহান বিজয় দিবস পালিত হয়। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে।

 

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে পরিচিত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।

 

তিনি স্বাধীনতা প্রাপ্ত যুদ্ধ-বিধ্বস্ত একটি দেশকে পূর্ণগঠন করেছেন মাত্র সাড়ে তিন বছরে। তিনি দেশের শিক্ষা, চিকিৎসা, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ধর্মীয় মূল্যবোধসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। যার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

বুধবার সকাল ১০টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন।

 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনের সঞ্চালনায়
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন, প্রাণ রসায়ন ও জীব প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রেহানা পারভীন এবং অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সেরনিয়াবাত। আলোচনা সভা শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন প্রতিযোগিতা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক
ড. মো. খোরশেদ আলম। এর আগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে। এর পরপরই ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স এসোসিয়েশন, গ্রেড ১১-১৬ ও গ্রেড ১৭-২০ কল্যাণ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু হল, শেরে বাংলা হল, শেখ হাসিনা হল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সংগঠন উত্তরাধিকার।