বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ডের কুদঘাটা বাজার সংলগ্ন বরিশাল-নবগ্রাম সড়কের দক্ষিণ পাশে দিন-দুপুরে জোরপূর্বক দোকানঘর নির্মাণের মাধ্যমে জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে।
জমির মালিক কাজল খানের পুত্র আক্কেল খান গংরা জানান, শাহজাহান মোল্লার পুত্র মালেক মোল্লা (৪৫) তার সন্ত্রাসী বাহিনী রনি, রানা, মিজান, ধলু, কবির, পনু, খালেক, সাবু, মোস্তাক ও গিয়াস হাওলাদারসহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জন পুরুষ-মহিলা দিয়ে দিন-দুপুরে জমি দখলের পাঁয়তারা করে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা প্রথমে বরিশাল এয়ারপোর্ট মডেল থানায় সশরীরে উপস্থিত হয়ে পূর্বে দায়েরকৃত অভিযোগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই সুমনের কাছে সাহায্য চেয়ে ব্যর্থ হয়।
পরবর্তীতে ঘটনাস্থলের পরিস্থিতির বেগতিক দেখে উপস্থিত একজন গণমাধ্যমকর্মী এয়ারপোর্ট মডেল থানার ডিউটি অফিসার কে মুঠোফোনে এ বিষয়ে অবগত করলে অসন্তুষ্ট মনে তিনি স্পষ্টভাবে জানান জমিজমা সংক্রান্ত কোন বিষয়ে পুলিশ হস্তক্ষেপ করেন না।
এতক্ষণে প্রায় ২ঃ৩০ অতিবাহিত হয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় ঘর উত্তোলনে বাধার সৃষ্টি করে।সর্বশেষ অবস্থার অবণতি দেখে স্থানীয়রা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে ভুক্তভোগির পরিবার থানা থেকে সহযোগিতার না পাওয়ার ব্যাপারটি অবগত করলে এবং এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে এয়ারপোর্ট মডেল থানার এসআই মুহিদ ও তার সহযোগী কয়েকজন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে প্রায় ৩০ মিনিটের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি সামাল দেন এবং সাময়িকভাবে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে পরবর্তী নির্দেশনা দেয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত নির্মাণাধীন কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়ে, মীমাংসার জন্য উভয়পক্ষকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার শরণাপন্ন হওয়ার নির্দেশ দেন।
সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগীরা জানান, আমরা স্থানীয় কাউন্সিলর নুরুল ইসলামের কাছে শালিস মিমাংসার জন্য গেলে তিনি কোন ফয়সালা না দিয়ে দুই পক্ষকে কোর্টে জেতে বলেন। কিন্তু আজ তারই ভূমিদস্যু সাঙ্গপাঙ্গরা মালেক মোল্লাকে ঘর উত্তোলন করতে সহায়তা করে। আমরা বারবার কাউন্সিলরকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে মোকাম বরিশাল বিজ্ঞ ল্যান্ডস সার্ভে ট্রাইবুনালে একটি মামলা চলমান আছে। যার বাদী মোঃ আক্কেল আলী খান, বিবাদী মোঃ মালেক মোল্লা। যার কেস নং-১৯৩০/১৯। জমির এসএ খতিয়ান নং ৪৫৭, জে এল নং-২৯, মৌজা ডেফুলিয়া, থানা : কোতয়ালী, জেলা, বরিশাল।
মামলার বাদী আক্কেল আলী খান সাংবাদিকদের জানান, আমার মা লালমন বিবি তার বাবার দুই আনা এবং নি:সস্তান ভাই হাতেম আলীর সোয়া ৫ আনা জমির মালিক।
কিন্তু বিবাদী জাল-জালিয়াতি করে ভুয়া দলিল বানিয়ে স্থানীয় কিছু ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসি গুন্ডা দিয়ে আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করে। আমরা বাঁধা দিলে আমাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দেয়। আমরা স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে এর সুবিচার পাইনি। এ ব্যাপারে একটি মামলা চলমান আছে।
আক্কেল আলী খান আরো জানান, মাস দুয়েক আগে আরেকবার জমি দখলের চেষ্টা করে। তখন আমরা থানায় অভিযোগ দিলে এসআই সুমন ঘটনাস্থলে এসে দুইপক্ষকে ঘর উত্তোলনে বাধা দেন। মূলত তার পর থেকেই সন্ত্রাসিরা জায়গাটি দখলে নেয়ার জন্য হন্য হয়ে উঠে।
তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচার দাবি করেন। এ ব্যাপারে ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের মুঠোফোনে জানান, এ ব্যাপারে তিনি কোনো কথা বলতে চান না।
তবে এ ঘটনার সময় বিরোধীয় সম্পত্তির সদস্য রনিসহ তার পক্ষের একাধিক লোকজন সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারে বলেন মূলত কাউন্সিলরের অনুমতি ও নির্দেশে এই কার্যক্রমের সিদ্ধান্ত নেন প্রতিপক্ষরা।