বরিশালে ডিবি পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরন করে মুক্তিপন আদায়

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে মারধর করে অপহরনের পর একটি ঘরে আটক করে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপন আদায় করা হয়। মঙ্গলবার দিনভর বিষয়টি নিয়ে টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে। অপহরনের ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে জেলার গৌরনদী পৌর সদরের টিএন্ডটি অফিস সংলগ্ন এলাকায়।

ওই এলাকার জনৈক এ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেনের বাসার ভাড়াটিয়া ও মদিনা মেডিকেল হলের মালিক মোঃ তুহিন জানান, সোমবার মাগরিবের নামাজের পর উত্তর পালরদী গ্রামের কালাম মিয়ার পুত্র বেল্লাল মিয়া, একই এলাকার সাগর সরদার ও আশোকাঠী এলাকার কালু বেপারীর পুত্র রিপন বেপারী তার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে এসে প্রথমে নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে বলেন, ওষুধ ব্যবসার অন্তরালে এখানে জামায়াত-শিবিরের কার্যক্রম পরিচালিত হয় বলে তাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে তার (তুহিন) সাথে ওই তিন যুবকের বাগ্বিতন্ডা হয়। তুহিন আরও জানান, এসময় তার প্রতিষ্ঠানে আসা এক ব্যক্তি বেল্লালকে চিনে ফেলায় তাৎক্ষনিক ওই তিন যুবক গৌরনদী পৌরসভার মেয়র তাদের পাঠিয়েছে বলে জানিয়ে তুহিনকে টানা হেঁচরা শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি (তুহিন) পৌর মেয়রের সাথে ফোনে কথা বলার বিষয়টি জানালে ওই তিন যুবক তাকে মারধর করে জোরপূর্বক অপহরন করে নিয়ে যায়।

সূত্রে আরও জানা গেছে, ব্যবসায়ী তুহিনকে আশোকাঠী এলাকার রিপনের শ্বশুড় এনায়েত খানের বাড়িতে আটকে রেখে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়। এনিয়ে একটি সাদা স্টাম্পেও তুহিনের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন দেন দরবারের পর এক লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করার পর তুহিনকে গভীর রাতে ছেড়ে দেয়া হয়।

ব্যবসায়ী তুহিন আরও জানান, তার কাছ থেকে নেয়া মুক্তিপনের সমূদয় টাকা স্থানীয় এক পৌর কাউন্সিলর ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিয়ে এ ব্যাপারে মামলা না করার জন্য বিভিন্ন ধরনের হুমকি অব্যাহত রেখেছেন।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, ব্যবসায়ী তুহিনকে অপহরনের খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আশোকাঠী এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে অপহরন ও মুক্তিপনের বিষয়টি শুনে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। ওসি আরও জানান, ব্যবসায়ী তুহিনকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর দুপুরে গৌরনদী উপজেলার টরকী ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে ফেরার সময় কসবা নামক এলাকায় বসে ডিবি পরিচয়ে জলিল তালুকদার নামের এক প্রবাসীকে মাইক্রোবাসযোগে অপহরন করে তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা ছিনতাই করা হয়।

এ ঘটনার কয়েকদিন যেতে না যেতেই গত ৪ জানুয়ারি দুপুরে গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর গ্রামের খাদিজা বেগম ও তার পুত্র কায়েস হাওলাদার নির্মাণ সামগ্রী ক্রয়ের জন্য নগদ দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে ভুরঘাটার উদ্দ্যেশে রওনা হন। পথিমধ্যে নীলখোলা নামকস্থানে পৌঁছলে একটি মাইক্রোবাস তাদের গতিরোধ করে ডিবি পরিচয়ে মা ও ছেলেকে মাইক্রোবাসযোগে অপহরন করে। পরবর্তীতে মা ও ছেলেকে মারধর করে সাথে থাকা নগদ অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে তাদের রাস্তার মাঝে ফেলে দেয়া হয়।