সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের পর করা হয়েছে রং। কিন্তু ভবন নির্মাণ কবে শেষ হবে তা নিশ্চিত নয়। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে কাজ। বরিশালের মুলাদী উপজেলার চরকালেখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ শেষ হয়নি সাড়ে ছয় বছরেও। ফলে অস্থায়ী টিনের ঘরে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে চরকালেখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও সাইক্লোন শেল্টারের বরাদ্দ হয়। ওই বছর বিদ্যালয়টির দুটি আধপাকা ভবন ভেঙে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা। প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মাণের কাজ দুই বছরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা ছিল।
শুরুর দিকে কাজ কিছুটা দ্রুত চললেও পরে শ্লথ হয়ে পড়ে। বিদ্যালয়ের পাইলিং ও পিলার করার পর কাজ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। পরে উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় ও উপজেলা প্রকৌশলী তাগিদ দিলে কিছুদিন কাজ চলে। কিন্তু ধীরগতির কাজের জন্য সাড়ে ছয় বছরেও কাজ শেষ করতে পারেনি তারা।
বর্তমানে বিদ্যালয়টির নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন নাভানার প্রকৌশলী, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাহিদ হোসেন বলেন, মূল ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় সেখানে পাঠদান করা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা গরমের মধ্যে টিনের ঘরে ক্লাস করছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজেদা বেগম জানান, দুই বছরের মধ্যে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। সেই লক্ষ্যে চরকালেখান আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একটি অস্থায়ী টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ভবন নির্মাণ শেষ না হওয়ায় পুরোনো টিনের ঘরেই শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বাধ্য হয়েই শিশুদের পাঠদান করতে হচ্ছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিতে জেএসসি ও এসএসসি কেন্দ্র এবং এইচএসসি পরীক্ষার ভেন্যু রয়েছে। পাবলিক পরীক্ষা চলাকালে বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হয় কিংবা বিকেলে খোলা রাখতে হয়। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হচ্ছে। পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানার প্রকৌশলী মো. মাসুদ মিয়া বলেন, কোম্পানির অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় কিছুটা সমস্যা থাকায় কাজ বন্ধ ছিল। এ ছাড়া করোনাকালে শ্রমিকস্বল্পতা এবং নির্মাণসামগ্রী সরবরাহে সমস্যা থাকায় কাজে বিলম্ব হয়েছে। বর্তমানে দুটি বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ চলছে। সেগুলো শেষ হলেই এই বিদ্যালয়ের কাজ শুরু করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাপ্ত করে ভবন হস্তান্তর করা যাবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. তানজিলুর রহমান বলেন, ‘ভবনের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ অন্য একটি প্রকল্পের এবং ঠিকাদারও ভিন্ন। তাই সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ শেষ হয়ে গেছে। মূল ভবনের বেশ কিছু কাজ বাকি আছে। আমি ভবনটি পরিদর্শন করেছি এবং ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’