#

সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের নদী ভাঙন কবলিত চরআবদানী গ্রামের অনেক কৃষক পরিবার মৌসুমী ফল ক্ষীরা চাষে সাবলম্বী হয়েছেন।

বর্তমানে ক্ষীরা তোলা, বিক্রি ও ক্ষেতের পরিচর্যা করায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

স্থানীয়রা জানান, চরবাড়িয়ার কীর্তনখোলা নদীর ভাঙনে এই গ্রামের অনেক পরিবার বসত ঘর ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছিল। চরম অভাবের মধ্যে দিন কাটাতো তারা।

এই গ্রামের কৃষক মো. জালাল প্যাদা প্রথমে ক্ষীরা চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরেই সফলতা পাওয়ায় অন্যরাও ক্ষীরা চাষে এগিয়ে আসে।

এ বছর প্রায় দুই একর জমিতে ক্ষীরা চাষ হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত ক্ষীরা খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে।

জেলার বিভিন্ন হাটে ক্ষীরা প্রতি মণ এক হাজার থেকে এক হাজার দুইশ টাকা পাইকারি ও প্রায় দুই হাজার টাকা খুচরা বিক্রি করা হয়।

চরবাড়িয়া ইউনিয়নের চরআবদানী গ্রামের অনেক কৃষক ধান চাষ করতো জমিতে। তবে কীর্তনখোলা নদীতে পলিমাটি জমে যাওয়ায় নদী থেকে ড্রেজিং করে বালু ফেলা হয়েছে অনেক জায়গা নিয়ে।

ধান চাষ করার ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা ঘরে বসে না থেকে বালু মাটিতে ক্ষীরা, লাউশাক, কুমড়া, বেগুনসহ বিভিন্ন রকমের ফসল উৎপাদন করা শুরু করেন।

এখানকার কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, সেচ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন না হওয়ায় কলসে করে পানি টেনে এনে ক্ষীরা ক্ষেতে দিতে হচ্ছে কৃষকদের।

যার ফলে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে তাদের। সেচ দেয়ার জন্য পাম্পের ব্যবস্থা থাকলে কৃষকদের চাষাবাদে অনেক সুবিধা হতো।

তারা আরো বড় পরিসরে ক্ষীরা চাষাবাদ করতে পারতেন। ক্ষীরা চাষে কৃষি অফিস তাদের প্রয়োজনীয় সুবিধা দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তারা।

কৃষক মো. মোতালেব হাওলাদার বলেন, জমিতে আগাম ক্ষীরা চাষ করতে তার ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং বাজারজাত করতে শ্রমিক খরচ আরো পাঁচ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে সাতদিনে ২১ হাজার টাকার ক্ষীরা বিক্রি করেন তিনি।

ক্ষীরাচাষি মো. জালাল প্যাদা নিউজজিকে বলেন, আমি এই গ্রামে প্রথম বালু মাটিতে ক্ষীরা চাষ শুরু করেছি। সফল হব কি না শিওর ছিলাম না। তবে যে পরিমাণে বালু মাটিতে ক্ষীরা চাষ হয়েছে, তাতে আমার মনে হয় আমি সফল। আর আমার সফলতা দেখে অন্যরাও ক্ষীরা চাষে এগিয়ে আসছে। আশা করি, বালু মাটিতে ক্ষীরা চাষ ভালোভাবে পরিচর্যা করলে ভালো ফসল হবে।

এ বছর বালু মাটিতে ক্ষীরার ফলন ভালো হয়েছে, আশা করি লাভবান হতে পারব। তবে চরবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা কৃষি অফিস যদি আমাদের একটি পাম্প দিয়ে সহযোগিতা করত তাহলে আমরা অনেক উপকৃত হতাম বলে জানান তিনি।

বরিশাল সদর উপজেলা চরবাড়িয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাতাব হোসেন সুরুজ বলেন, আমার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই কৃষকদের সার ও বীজসহ বিভিন্ন কৃষি সরঞ্জাম দিয়ে সহযোগিতা করে আসছি। কৃষকদের ‍যদি আরো সহযোগিতা প্রয়োজন হয় তাহলে সহযোগিতা করা হবে।

বরিশাল সদর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, নদীর ড্রেজিং করা গ্রামের বালুমাটি ক্ষীরা চাষের জন্য উপযুক্ত। এখানকার কৃষকরা বেশ পরিশ্রমী। আমরা কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের সাধ্যমতো পরামর্শ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সহযোগিতা করব।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন