বরিশালের আগৈলঝাড়ায় শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে হলুদ বর্ণ হয়ে ঝরে পরছে পান। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীরা।
পান চাষী ও উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ২৯০ হেক্টর জমিতে পান চাষের সঙ্গে তিন হাজার ৫৫০ জন পান চাষী পরিবার জড়িত রয়েছে। এসব পরিবারের একমাত্র উপার্জন পান বরজ। অল্পদিনে পান বাজারজাত করা যায় বলে অনেকেই পান চাষে আগ্রহী হয়ে ফসলি জমিতে মাটি ভরাট করে পান বরজ করেছেন। আগৈলঝাড়ার উৎপাদিত পান বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে এলাকায় বর্ষা মৌসুমে বেশি পানি না হওয়ায় সমতল ভূমির চেয়ে অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে পান চাষ করার উপযুক্ত স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে চাষীরা।
পান চাষী খোকন দাশ বলেন, আমার ৭০ শতাংশ উচু জমিতে ৩৭৫ খানা পান বরজ রয়েছে। শীতের সময় বেশি মূল্যে বিক্রির আশায় কার্ত্তিক মাস থেকে চার মাস পান বরজের লতায় পান সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু শীত ও ঘন কুয়াশায় পান চাষীরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। কুয়াশা ও শীতের কারণে বরজের পান পাতা হলুদ বর্ণ হয়ে ঝড়ে পরায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা।
একাধিবার শৈত্য প্রবাহের কারণে পান বরজের চারিদিকে পলিথিন ও নেট দিয়ে চাষীরা পান রক্ষার চেষ্টা করে আসছেন বলেও জানান খোকন।
ঢাকার শ্যামবাজার পানের পাইকারি ও বিদেশে রপ্তানি কারক প্রতিষ্ঠান ভাই ভাই পানের আড়তের মালিক মজিবর ফকির বলেন, এ অঞ্চলের উৎপাদিত পান ঢাকা, লাকসাম, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হচ্ছে।
তিনি বলেন, শ্যামবাজারের পানের আড়তের মাধ্যমে আগৈলঝাড়ার পান কুয়েত, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, বাহরাইন, কাতার, স্পেন, ইতালি, লন্ডনসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। এ কারণে আগৈলঝাড়ার বিভিন্ন স্থানে একাধিক পাইকারি পানের আড়ৎ গড়ে উঠেছে। এ এলাকায় ফলানো পান বর্তমানে ৩০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি বিড়া (৭২টি) পান বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর বসু বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পান বরজ পরিদর্শন করে চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষীরে বিষয়ে চিন্তা করে কোনো সাহায্য সহযোগীতা করলে তা পান চাষীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।