বরিশালে করোনা ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি

:
: ৪ years ago

দেশে করোনাভাইরাসে ৩ জন আক্রান্তের খবরে নড়েচড়ে বসেছে বরিশাল জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। জেলার ১০ উপজেলায় গঠন করা হয়েছে করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটি। জনগণকে সচেতন করতে চালানো হচ্ছে প্রচারণা।

এদিকে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা আইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছে। এছাড়া শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন বর্ধিত ভবনে করা হয়েছে করোনা ইউনিট। পাশাপাশি বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে নগরীর কালিজিরায় সাউথ এ্যাপোলো হাসপাতালকে আইসোলেশন ইউনিট হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।

বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আগে থেকেই সব প্রস্তুুতি নেয়া হয়েছে। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা আইসোলেশন ইউনিট (করোনা কর্নার) প্রস্তত রাখা হয়েছে। সেখানে বেডসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসকদের নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠক করা হয়েছে।

বুধবার উপজেলায় কর্মরত সরকারি ৬০ জন চিকিৎসককে নিয়ে করোনা সংক্রামন ঠেকাতে করণীয় সম্পর্কে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা সবকিছু তদারকি ও দেখভাল করবেন।

সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন বর্ধিত ভবনে করোনা ইউনিট প্রস্তত করা হয়েছে। এছাড়া নগরীর কালিজিরায় ৩০০ শয্যার সাউথ এ্যাপোলো হাসপাতালকে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন ইউনিট হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। গৌরনদী উপজেলায় ইতালি ফেরত চারজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেয়া হচ্ছে। এছাড়া করোনাভাইরাসের ঝুঁকি আছে, এমন লোকজন শনাক্ত হলে তাদের আইসোলেশন ইউনিটে নিতে সার্বক্ষণিক একটি দল প্রস্তত রাখা হয়েছে।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, নতুন বর্ধিত ভবনে করোনা ইউনিট করা হয়েছে। সেখানে প্রাথমিকভাবে ২০ শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজনে বাড়িয়ে ১৩০ শয্যা করার ব্যবস্থা করা যাবে। এছাড়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের নিয়ে ৭টি দল করা হয়েছে। প্রতিটি দলে ৭ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এছাড়া প্রতিদলের সঙ্গে ৪ সেবিকা ও একজন করে পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন।

ডা. বাকির হোসেন জানান, রোগীদের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও চিকিৎসকদের গ্লাভস, মাস্ক ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সংকট রয়েছে। সেগুলো এখনও সরবরাহ করা হয়নি। আমাদের কাছে যে পরিমাণ পিপিই রয়েছে, তা দিয়ে আমরা প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারব। তবে পিপিই প্রয়োজন হবে।

জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জানান, করোনা মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলোকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া জনগণকে সচেতন করতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে বলা হচ্ছে। তবে বরিশালে করোনা আক্রান্ত কোনো রোগীর সন্ধান মেলেনি। এরপরও করোনা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।