বরিশালে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ৫৪ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে এই নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪১৮ জনে। আজ ঢাকার ইনস্টিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স এন্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভ থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আগৈলঝাড়া উপজেলার বাসিন্দা ৩ জন, মুলাদী উপজেলার বাসিন্দা ২ জন এবং মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা ১ জন চিকিৎসকসহ মোট ৬ জন।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ৭ জন সদস্য, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ জন নার্স এবং ১ জন স্টাফসহ ২ জন, বাবুগঞ্জ ও সদর উপজেলার জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত ৪ জন নার্স, ১ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও ১ জন স্টাফসহ ৬ জন, বাবুগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা ৬ জন, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা ২ জন, বানারীপাড়া উপজেলার বাসিন্দা ২ জন, উজিরপুর উপজেলার বাসিন্দা ১ জন, গৌরনদী উপজেলার বাসিন্দা ১ জন, বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা ৫ জন, মুলাদী উপজেলার বাসিন্দা ১ জন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনভুক্ত এলাকার ধান গবেষনা রোড, কাউনিয়া এবং নথুল্লাবাদ এলাকার বাসিন্দা ২ জন করে ৬ জন, মহাবাজ, ভাটিখানা, পলাশপুর, ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড, রুপাতলী, নাজির মহল্লা, ফরেস্টার বাড়ি প্রত্যেক এলাকার ১ জন করে ৭ জন, রাহাত-আনোয়ার হসপিটালের ২ জন স্টাফ তাদের কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে। আজ ২ জুন মঙ্গলবার ঢাকার ইনস্টিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স এন্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভ থেকে প্রাপ্ত ৬ জনসহ এবং বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ এর মাইক্রোবায়লোজি বিভাগে স্থাপিত আরটি-পিসিআর ল্যাবে বেশ কিছু নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৪৮ জনের রিপোর্ট পরেজটিভ আসে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক এস, এম, অজিয়র রহমান জানান, রিপোর্ট পাওয়ার পর পরই ওই ৫৪ জন ব্যাক্তির অবস্থান অনুযায়ী তাকে লকডাউন করা হয়েছে তাদের আশপাশের বসবাসের অবস্থান নিশ্চিত করে লকডাউন করার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি তাদের অবস্থান এবং কোন কোন স্থানে যাতায়াত ও কাদের সংস্পর্শে ছিলেন তা চিহ্নিত করার কাজ চলছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ পর্যন্ত বরিশাল জেলায় ১০৮ জন নারী এবং ৩১০ জন পুরুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে শূণ্য থেকে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত আক্রান্ত ২৭ জন, ২০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত আক্রান্ত ৩২৬ জন, ৫০ থেকে তার উর্ধে ৬৫ জন। বরিশাল জেলায় করোনা আক্রান্ত উপজেলা সমূহ বরিশাল মহানগরী ৩১৬, সদর উপজেলা ৯জন (রায়পাশা কড়াপুর, শায়েস্তাবাদ, টুংঙ্গীবাড়িয়া, জাগুয়া, চরকাউয়া-৩ এবং চরমোনাই-২), বাবুগঞ্জ ২২জন, উজিরপুর ১৩জন, মেহেন্দীগঞ্জ ৯জন, বাকেরগঞ্জে ১৮জন, হিজলা ৪জন, মুলাদী ৮জন, বানারীপাড়া ৯জন, আগৈলঝাড়া ৬জন এবং গৌরনদীতে ৪জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়।
অদ্যাবধি এ জেলায় মোট ৪৫ জন ব্যক্তি করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। উল্লেখ্য আজ ২ জুন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ জন নার্স ও ১ জন স্টাফসহ ২ জন, জেলার বাবুগঞ্জ ও সদর জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত ৪ জন নার্স, ১ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও ১ জন স্টাফসহ ৬ জন মোট ৬ জনসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যক্তির ৮ করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে এ জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ১৭ জন চিকিৎসক (ইন্টার্ন চিকিৎসক ৬ জন), ২৭ জন নার্স, ২ জন রেজিস্টার, ১ জন নার্স সুপারভাইজার, ২ জন মেডিকেল টেকনলজিস্ট, ২ জন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, ১ জন স্টোরকিপার, ১ জন ড্রাইভার, ৫ জন স্টাফ, ১ জন কার্পেন্টার, ১ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী সহ সর্বমোট ৫৯ জন ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বরিশাল জেলায় মুলাদী উপজেলায় করোনা শনাক্ত হয়ে ১ জন ব্যক্তি গত ১২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
গত ৩০ মে করলার উপসর্গ নিয়ে মুলাদী উপজেলায় আরো ১ জন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন। গত ৩০ মে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ১ জন ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ নিয়ে জেলায় ৩ জন করোনা পজিটিভ ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন। গত ১২ এপ্রিল এ জেলায় প্রথমবারের মতো মেহেন্দীগঞ্জ ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ০২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পরিপ্রেক্ষিতে ঐদিনই জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।