জেলার উজিরপুর উপজেলার সাতলা বাজারের একটি দ্বিতল ভবনের ছাঁদে নিয়ে মাদ্রাসা ছাত্র সাইয়ুম বিশ্বাস নাইমকে (১১) হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের তিনদিন পর ঘাতক মিলন ফকিরকে (১৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে উজিরপুর মডেল থানার ওসি শিশির কুমার পাল জানান, গ্রেফতারকৃত মিলন ফকির বরিশাল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ গোলাম ফারুকের কাছে হত্যাকান্ডের সাথে নিজে জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।
জবানবন্দিতে মিলন জানায়, সাতলা গ্রামের নানা বাড়িতে বেড়াতে এসে মিলন ফকির মাদক সেবন করছিলো। এলাকায় বসে মাদক সেবন করায় সাঈদ বিশ্বাস (নানাবাড়ির প্রতিবেশী) মিলন ফকিরকে মারধর করে। এ ঘটনার জেরধরে গত ২৭ এপ্রিল রাত আটটার দিকে সাঈদের ছোট ভাই মাদ্রাসা ছাত্র সাইয়ুমকে সাতলা বাজারের রহিম বিশ্বাসের দ্বিতল ভবনের ছাঁদে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বসে মিলন তাকে মারধরের বিষয়টি সাইয়ুমকে জানালে উভয়ের মধ্যে বাগ্বিতন্ডা হয়। এসময় মিলন বড় ভাই সাঈদের মারধরের প্রতিশোধ নিতে তার ছোট ভাই সাইয়ুমকে চর (থাপ্পর) মারে। একপর্যায়ে মিলনকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যেতে চাইলে সাইয়ুমের গলা টিপে ধরলে শিশুটি দুর্বল হয়ে লুটিয়ে পরে। পরবর্তীতে মিলন পুনরায় সাইয়ুমের গলা টিপে শ্বাসরুদ্ধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে।
মিলন ছাদের এককোনে সাইয়ুমের লাশ লুকিয়ে রেখে মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরে রাত দুইটার দিকে মিলন আবার মরদেহ দেখতে এসে সাইয়ুমের কাছ থেকে নেয়া মোবাইল ফোনের সিম কার্ডটি সেখানে ফেলে রেখে যায়। পরেরদিনই মিলন তার বাড়ি আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা গ্রামে চলে যায়।
ওসি আরও জানান, ২৮ এপ্রিল সাইয়ুমের লাশ উদ্ধারের পর ২৯ এপ্রিল নিহতের পিতা মোশাররফ হোসেন বিশ্বাস বাদি হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে প্রযুক্তির মাধ্যমে মঙ্গলবার রাতে আগৈলঝাড়ার বাগধা গ্রামে থেকে মিলন ফকিরকে গ্রেফতার করা হয়। সে (মিলন) ওই গ্রামের আলম ফকিরের পুত্র। পুলিশ গ্রেফতারকৃত মিলনের কাছ থেকে নিহত সাইয়ুমের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া দামি মোবাইল ফোন সেটটি উদ্ধার করেছে।
ওসি শিশির কুমার পাল বলেন, বুধবার শেষকার্যদিবসে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে মিলন জানিয়েছে সে ঢাকায় একটি লেপ-তোষকের দোকানে কাজ করে। পরবর্তীতে আদালতের বিচারকের নির্দেশে ঘাতক মিলন ফকিরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।