বাস শ্রমিকদের হামলার প্রতিবাদে বরিশালের রূপাতলীতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন ইজিবাইক চালকরা। শুক্রবার (৩ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে রূপাতলী গোল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
তবে এক ঘণ্টা পর পুলিশ প্রশাসনের সমঝোতায় অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।
জানা গেছে, রূপাতলী গোল চত্বর থেকে যাত্রী পরিবহন করেন ইজিবাইক চালকরা। এতে দীর্ঘদিন ধরে বাধা দিয়ে আসছিল রূপাতলী বাস মালিক সমিতি। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বাস শ্রমিকরা সংঘবদ্ধভাবে ইজিবাইক চালক শাওন ও আব্দুল্লাহকে মারধর করে এবং গাড়ি ভাঙচুর করে। এর প্রতিবাদে ইজিবাইক চালকরা সড়ক অবরোধ করেন। এতে একাত্মতা পোষণ করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশালের সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী।
ইজিবাইক চালক রমজান আকন বলেন, আমরা হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছি।
ইজিবাইক চালক আব্দুর রশিদ বলেন, বাস শ্রমিকরা রূপাতলীর এক কিলোমিটারের মধ্যে আমাদের দাঁড়াতে দেবে না। কোনো নিয়ম না মেনে তারা এভাবে আমাদের ওপর অত্যাচার করছে। আমাকেও আজকে সকালে মারধর করেছে।
আরেক শ্রমিক রিপন হোসেন বলেন, ট্রাফিক পুলিশের সামনেই আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে আমাদের মারাত্মক আহত করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
রাব্বি হোসেন নামে এক ইজিবাইক চালক বলেন, কিস্তিতে টাকা তুলে গাড়ি কিনে ৫ টাকা ভাড়ায় যাত্রী নিই। সেই যাত্রীও নিতে দেবে না বাস শ্রমিকরা। ইজিবাইক রূপাতলী দাঁড়াতে দেবেন না। এরপরই আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
পরে পুলিশ এসে তাদের আশ্বস্ত করে সড়ক থেকে তুলে নেন এবং রূপাতলী ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বৈঠকে বসেন। সেখানে ডেকে আনা হয় বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপনকে।
পুলিশ বক্সে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মো. ফারুক, কোতোয়ালি থানার সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসানের মধ্যস্ততায় বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনার পর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বাস শ্রমিকরা এমন আচরণ আর করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
বাসদের সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, বাস শ্রমিক এবং থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে যে বিরোধটি তৈরি হয়েছে তা বাস মালিকদের কর্তৃত্ব ধরে রাখতে গিয়ে তারা তৈরি করেছেন। আজকে ইজিবাইক চালকদের মারধর করেছে বাস শ্রমিকরা। এর প্রতিবাদে ইজিবাইক চালকরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে আমরা সকলে বসে একটি সমাধানে এসেছি। বাস মালিক নেতা কাওছার হোসেন শিপন দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া আলাদা স্ট্যান্ড না হওয়া পর্যন্ত রূপাতলীতে ইজিবাইক চালকরা যাত্রী উঠাতে ও নামাতে পারবেন।
রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন বলেন, ইজিবাইক চালকরা এমনভাবে সড়কে গাড়িগুলো রাখে তাতে বাসগুলো চলাচল করতে পারে না। এ নিয়ে দুই পক্ষের শ্রমিকদের মাঝে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ঘটনা শেষ হয়ে গিয়েছিল তবে ডা. মনীষা চক্রবর্তী এসে সড়ক অবরোধ করেন। তবে আমি গিয়ে শেষে পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে ঘটনার সমাধান করে দিয়ে এসেছি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মো. ফারুক বলেন, ইজিবাইক চালকরা ইজিবাইক স্ট্যান্ডের দাবি করেছেন। রূপাতলীতে জায়গার সংকট রয়েছে, এজন্য আলাদাভাবে স্ট্যান্ড দেওয়া সম্ভব না। সড়ক সকলেই ব্যবহার করবেন। তবে কোনো গাড়ি সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারবেন না। যদি কেউ করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিব।