দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বরিশাল জেলার ১২টির মধ্যে ৯টিতে জয় পেয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। এছাড়া একটিতে হাতপাখা ও দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্ব স্ব উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
নির্বাচনে ভোটের মাঠের লড়াইয়ের আগেই বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে বিনা প্রতিদন্দিতায় বিজয়ী হয়েছেন।
যাদের মধ্যে রাজিহার ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইলিয়াস তালুকদার, বাকাল ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিপুল দাস, বাগধা ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি, গৈলা ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শফিকুল হোসেন ও রত্নপুর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গোলাম মোস্তফা সরদার এককভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
এছাড়া আজ ভোটগ্রহণ শেষে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো.আনোয়ার হোসেন মৃধা ৮৬৯০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আ. রাজ্জাক মাস্টার ৩৭১৭ ভোট পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম।
অপরদিকে বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আহম্মদ শাহরিয়ার ৩৪৮৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান ৩৪৪৪ ভোট পেয়েছেন।
এ উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল ইসলাম ৭৪৬২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতপাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আহম্মদ আলী তালুকদার পেয়েছেন ৫৭২৪ ভোট।
চরমোনাই ইউনিয়নে হাতপাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সৈয়দ মো. জিয়াউল করিম ১০ হাজার ৩৯৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নুরুল ইসলাম ৬৯০১ ভোট পেয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মোঃ আবদুল মান্নান।
এ উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ জাহিদ হোসেন ৪৩৪৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী হাতপাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মোঃ আলী আজিম খান পেয়েছেন ২৯৩৫ ভোট। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটার্নিং অফিসার চৌধুরী মোহাম্মদ শওকত হোসাইন।
চন্দ্রমোহন ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ সিরাজুল হক ৩০৫৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতপাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মোঃ অলিউর রহমান পেয়েছেন ২৫২৫ ভোট। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটার্নিং অফিসার বাবুল গাজী।
শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরিফুজ্জামান মুন্না ৫৭৫৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রুবেল হোসেন মামুন পেয়েছেন ৪৬৫৩ ভোট। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটার্নিং অফিসার সঞ্জীব সন্নামত।
বরিশাল জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা নূরুল আলম বলেন, আমরা সবসময়েই চেষ্টা করি একটি সুষ্ঠ ভোট সম্পন্ন করার। এবারও আমাদের চেষ্টা ছিল। তাছাড়া প্রার্থীরা নির্বাচনী বিধি মোতাবেক কাজ করেছেন, প্রশাসন থেকেও জনগণকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। সার্বিক সমন্বয়ে জনগণ অনুপ্রাণিত হয়েছেন বলে সবাই ভোট কেন্দ্রে এসেছেন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে।
এই কর্মকর্তা বলেন, বরিশালের এই নির্বাচন একটি মডেল। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা, স্বজনপ্রীতি বা প্রভাবের কাছে আমরা নত হইনি। যে কারণে ভোটারদের কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ উপহার দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
নূরুল আলম আরও বলেন, এখন পর্যন্ত টেলিফোনিক তথ্যে জানতে পেরেছি বরিশাল সদর উপজেলায় ৭০ থেকে ৭২ শতাংশের মতো, আগৈলঝাড়ায় ৬৮ শতাংশের বেশি এবং বানারীপাড়া উপজেলায় ৬৫ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পড়েছে। তবে সঠিক তথ্য দেওয়া যাবে ফলাফল পূর্ণরুপে আসার পরে।