বরিশালে আদালত চত্ত্বরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ক্যামেরা ভাঙচুর

:
: ২ years ago

বরিশাল আদালত চত্ত্বরে জালিয়াতির মামলায় জেল হাজতে পাঠানো আসামির ছবি তুলতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন স্থানীয় ও টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকেরা।

এতে স্থানীয় পত্রিকাসহ টেলিভিশন চ্যানেলের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এসময় ভাঙচুর করা হয়েছে সাংবাদিকদের বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলসহ টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরা।

আজ বুধবার দুপুর ২টা থেকে থেমে থেমে চলা কয়েক দফা হামলায় একপর্যায়ে আসামি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল ইসলাম হাওলাদারের বাহিনীর সাথে আইনজীবী সহকারিরাও অংশ নেয়। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে হিমশিম খেতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল হকের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিবেশ শান্ত করে। তবে এই হামলার ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

প্রত্যক্ষদর্শী, আদালত ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নিজ এলাকায় ভূমি নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম হাওলাদারসহ ৫ জনকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। সাংবাদিকেরা এই খবর সংগ্রহ করাসহ তাদের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করতে বেলা ১২টার পর থেকে আদালত চত্ত্বরে অবস্থান নেয়। কিন্তু আদালতে কর্মরত পুলিশেরা কোনো ভাবেই আসামির ছবি বা ভিডিও ধারণ করতে দেয়নি এবং সাংবাদিকদের সহায়তা দেয়নি।

সংবাদকর্মীরা জানায়, আসামি শহীদ হাওলাদারকে যখন কারাগারের গারদখানা থেকে বের করা হচ্ছিলেন তখন সাংবাদিকেরা ছবি ও ভিডিও ধারণ প্রস্ততি নিলে শহীদুল ইসলাম হাওলাদারের লোকজন বাধা দেয়। সেই বাধা উপেক্ষা করে সাংবাদিকেরা ছবি ধারণ করতে গেলে তাদের ওপর চেয়ারম্যানের লোকজন হামলা করে এবং বাংলাভিশন টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসনসহ দুজনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এসময় জেলা পুলিশের দায়িত্বরত সদস্যদের অনেকটা নিরব ভুমিকায় থাকতে দেখা যায়।

এনিয়ে আদালত চত্ত্বরে আরও সাংবাদিকেরা উপস্থিত হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা আদালত চত্ত্বরের উত্তর এবং সাংবাদিকেরা দক্ষিণ পাশে অবস্থান নিলে মাঝখানে পুলিশ সদস্যদের থাকতে দেখা যায়। এবং পরিস্থিতিও অনেকটা শান্ত হয়। কিন্তুএরই মধ্যে কোনো কিছু বোঝার আগেই আদালতের উত্তর পাশ থেকে আইনজীবী সহকারি অন্ত ২০ থেকে ৩০ জন একত্রিত হয়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে।

এসময় সাংবাদিককেরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এবং তাদের মারধর করাসহ টেলিভিশন চ্যানেলের কয়েকটি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। এসময় সাংবাদিকেরা আত্মরক্ষার্থে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের অন্তত ৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। এই উদ্বুদ্ব পরিস্থিতির খবর পেয়ে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসির নেতেৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য এসে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করলেও সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল হক জানান, আদালত চত্ত্বরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা আছে। বর্তমানে পরিবেশ-পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ওসি বলেন, যদ্দুর জানা গেছে কয়েক দফা মারমারি হয়েছে। এতে সাংবাদিক-আইনজীবী সহকারিসহ উভয় গ্রুপের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।