আগেই আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাস দিয়েছিল, চলতি নভেম্বর মাসে বঙ্গোপসাগরে একাধিক নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এই নিম্নচাপের যেকোনো একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনার কথাও বলেছিল তারা। এবার সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে যাচ্ছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি দেশে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’।
গতকাল শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ দলের (বিডব্লিউটি) পক্ষ থেকে এ সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তারা জানিয়েছে, আগামী ১৫ থেকে ১৬ নভেম্বরের ভেতর বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার পরিবেশ আসতে যাচ্ছে। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এটি ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এ পরিণত হবে। যা ১৮ থেকে ১৯ নভেম্বর উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
সতর্ক বার্তায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এ সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা আওতায় থাকতে পারে ভারতের উড়িষ্যা উপকূল থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য অঞ্চলগুলো হলো ব্রাহ্মপুর, শ্রীকাকুলাম ও বিশাখাপাত্নাম।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে থাকবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা, বাংলাদেশের সুন্দরবন, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা ও পটুয়াখালী উপকূলীয় এলাকাগুলো। পিরোজপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলাকেও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে হাতিয়া, লক্ষ্মীপুর, ফেনী থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কুতুবদিয়া এবং ভারতের দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের কিছু অংশকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গত ২ নভেম্বর আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দিতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকার ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।
বিশেষজ্ঞ কমিটির চলতি মাসের পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানানো হয়, নভেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানানো হয়, নভেম্বর মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে পারে। তবে এ মাসে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা বা মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীতে স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় থাকতে পারে।