বরিশালের ৬ জেলায় ২ লাখ ৬০ হাজার পশু প্রস্তুত

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহাকে ঘিরে বরিশাল বিভাগ জুড়ে ২ লাখ ৬০ হাজার গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যার সংখ্যা কয়েক দিনে আরও বাড়তে পারে বলেও ধারণা করছে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর।

বিভাগে এবছর প্রায় চার লাখের কাছাকাছি পশু কোরবানি করার চাহিদা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যা মোট চাহিদা গতবছরের তুলনায় এবার প্রায় ৫/১০ শতাংশ কম পশু। পশু প্রস্তুত করতে যে খরচ হয়েছে তা বিক্রি করে ন্যায্য খরচ উঠানো নিয়েও দেখা দিয়েছে নতুন শঙ্কা ।

 

একই সাথে করোনার প্রভাবে এবছর কমেছে পশু কোরবানি করা মানুষের সংখ্যা। তবুও কোরবানির মোট চাহিদা পূরণ করতে বরিশাল বিভাগের বাইরে থেকে আসবে ২০/২৫ শতাংশ পশু।

খামারিরা বলছেন, কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা পশু বিক্রি করে লাভের আশা তো দূরের কথা, মূল্য খরচে পশু বিক্রি করা নিয়ে দেখা দিয়ে অনিশ্চয়তা।

 

বরিশাল প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় গত বছর কোরবানি পশুর চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল চার লাখ ৪৩ হাজার। এবছর করোনা পরিস্থিতিতে ধারণা করে গতবছরের চেয়ে প্রায় ৫/১০ শতাংশ কমিয়ে ৪ লাখ পশু কোরবানি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছেন সংশ্লিষ্ট এই দপ্তরটি।

 

আরও জানা গেছে, গতবছরের লক্ষ্যমাত্রার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৬০০ পশু স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছিল। বাকি পশু বিভাগের বাইর থেকে বিশেষ করে কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, ঝিনাইদহসহ অন্যান্য জেলা থেকে আনা হয়েছিল। কিন্তু এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী মোট চাহিদার পূরণ করতে বরিশাল বিভাগের ১৯ হাজার ৮০৬ জন খামারির কাছ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত কোরবানির জন্য বিক্রিযোগ্য দুই লাখ ৬০ হাজার পশুর তালিকা পাওয়া গেছে।

 

এছাড়া বিভাগে পারিবারিকভাবে লালন-পালন করা (গৃহস্থালি) আরও প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানা গেছে। বাকি ২০/২৫ শতাংশ পশু প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বরিশাল বিভাগের বিভাগের বাইরে থেকে বিশেষ করে কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, ঝিনাইদহসহ অন্যান্য জেলা থেকে এনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হবে।

 

খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে পশু পালন করতে তাদের গত বছরের তুলনায় এবছর খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। যে খৈল ৩০ থেকে ৩২ টাকায় কিনত তা এখন কিনতে হচ্ছে ৩৮-৩৯ টাকায়। পরিবহন খরচসহ সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ শত টাকার মনপ্রতি ভুট্টা কিনতে হচ্ছে ৯০০ টাকায়। ১৫০ থেকে ২০০ টাকার ভুসি কিনতে হচ্ছে ২৫০ টাকায়।

করোনার প্রাদুর্ভাব এড়াতে খামারে পরিচ্ছন্নতা, জীবাণুনাশক ও রোগবালাই নাশক এবং পরিচর্যাকারীদের পেছনেও খরচ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।

 

উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের মুন্ডাপাশা গ্রামের মো. গোলাম হোসেন ঢালী নামে এক খামারি জানান, কোরবানির এক-দেড়মাস আগেই স্থানীয় খারামগুলোতে পাইকারদের আনাগোনা আর খোঁজ-খবর থাকে। কিন্তু করোনা কারণে এবছর তেমন কোন আনাগোনা আর খোঁজ-খবর নেই। করোনায় বেশি দামে খাদ্য, ঔষধ কেনাসহ অন্যান্য খরচ চালিয়ে গরু-ছাগল কোরবানিযোগ্য করতে যে খরচ হয়েছে তা বিক্রি করে সমানসমান থাকা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন খামারিরা।

 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক ডা. কানাই লাল স্বর্ণকার জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আর্থিক সংকটের কারণে এবছর ধারণা করে প্রায় ৪ লাখের কাছাকাছি পশু কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

চাহিদা পূরণ করতে মাত্র ২০/২৫ শতাংশ পশু বরিশালের বাইরে থেকে আনা ছাড়া বাকি পশু বরিশাল বিভাগের খামারি ও গৃহস্থালিতে থেকে পূরণ করা সম্ভব হবে বলেও জানান এই উপ-পরিচালক।