অনলাইন ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর চলছে পুরোদমে প্রচার প্রচারণার কাজ। আর প্রচারণায় বরিশালের ছয়টি সংসদীয় আসনের ২৪জন প্রার্থী ধার ও দানের টাকা দিয়ে ব্যয় নির্বাহ করবেন। এছাড়া ১১জন প্রার্থী নিজস্ব তহবিল ও ব্যবসার টাকায় নির্বাচন করছেন।
নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের জমা দেওয়া নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের জন্য অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাব্য উৎসের বিবরণী সূত্রে জানা যায়, বরিশাল-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপনসহ এই আসনের ৪ প্রার্থী দান ও ধারের টাকায় নির্বাচন করছেন।
এই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ নিজ আয় থেকে ১০ লাখ টাকা এবং তার তিন ছেলের কাছ থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দেওয়ার ১৫ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের প্রাপ্ত অর্থ হিসেবে দেখিয়েছেন।
বিএনপির প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের প্রাপ্ত অর্থ হিসেবে নিজ আয় থেকে আড়াই লাখ টাকা ও তার ভাইয়ের থেকে ধার বাবদ সাড়ে ৬ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর কাছ থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত প্রদত্ত দানের ১৬ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করেছন। এ আসনে বাকী ২ প্রার্থীর মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের মো. রাসেল সরদার ব্যবসা থেকে ১ লাখ টাকার পাশাপাশি অনুদান হিসেবে আরও দেড়লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের প্রাপ্ত অর্থ হিসেবে দেখিয়েছেন।
বরিশাল-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ আলম নিজ ব্যবসার ২০ লাখ টাকা ও খালাতো ভাইয়ের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা দেনা করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। একই সঙ্গে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপির সরদার সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টু আগে ব্যবসা থেকে আয় ২৫ লাখ টাকা নির্বাচনী খরচ হিসেবে উল্লেখ করছেন।
বরিশাল-৩ আসনে জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু, বিএনপির জয়নুল আবেদীন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমান ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রার্থী এনায়েত কবির ব্যবসা ও নিজস্ব তহবিল থেকে ২৫ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় করবেন বলে জানা গেছে।
বাকী প্রার্থীর মধ্যে এ আসনে নৌক প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ টিপু সুলতান তার সংসদ সদস্য হিসেবে প্রাপ্ত আয় ও বাড়ি ভাড়া থেকে ৫ লাখ টাকা, শ্যালকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার, স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দেওয়ার সাড়ে ৩ লাখ টাকা ও স্বজন ব্যতিত ধার ৫০ হাজার টাকা, দলের সহযোগিতা হিসেবে গণচাঁদার ১ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের প্রাপ্ত অর্থ হিসেবে দেখিয়েছেন।
বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথ নিজ ব্যবসার আয় থেকে নির্বাচনী ব্যয় ২৫ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করেছেন এবং সাইফুল্লাহ নামে অপর এক প্রার্থী শিক্ষকতা থেকে আয়ের ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা নির্বাচনী ব্যয় করবেন বলে ব্যয় বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী নূরুর রহমান ব্যবসা থেকে ১৩ লাখ টাকা এবং ধার ও দেনার ৯ লাখ টাকা নির্বাচনে খরচ করবেন।
বরিশাল-৫ আসনের বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার ব্যবসা থেকে ২৫ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় উল্লেখ করেছেন। সরোয়ারের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের জাহিদ ফারুখ শামীম বাড়ি ভাড়া ও পেনশন থেকে ১০ লাখ টাকা, স্ত্রী ও ছেলের কাছ থেকে ধার ১০ লাখ টাকা এবং এক শুভানুধ্যায়ীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় করবেন বলে হলফ নামায় দেখা গেছে। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমও নির্বাচন করছেন দানের টাকায়। হাদিয়া থেকে তিনি ১ লাখ টাকা এবং স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় নির্বাচন করবেন তিনি।
বরিশাল-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন খান নিজ ব্যবসার ১৫ লাখ টাকা এবং দানের ১০ লাখ টাকা দিয়ে নির্বাচন করছেন। এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী নাসরিন জাহান রতনা নিজস্ব তহবিল থেকে ১৯ লাখ টাকা এবং তিন ভাইয়ের কাছ থেকে ধার করেছেন ৬ লাখ টাকা। একই আসনে নিজ অর্থে নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী তালুকদার, ইসলামী আন্দোলনে নূরুল ইসলাম ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের মো. মহসীন।