বরিশালের ২২৪ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ৫ বছর পর পুনরুদ্ধার করে হস্তান্তর করলেন জেলা প্রশাসক অজিয়র রহমান

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

বরিশালে ২২৪ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতার তিন কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ৫ বছর পর ‘পুনরুদ্ধার’ করেছে জেলা প্রশাসক বরিশাল এস, এম, অজিয়র রহমান।

আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল সারে পাঁচটায় জেলা প্রশাসক বরিশাল এর সভা কক্ষে এসএমই পণ্য মেলা ২০১৮-১৯ এর সংবাদ সম্মেলনের অনুষ্ঠানে এই সংক্রান্ত কাগজপত্র মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোখলেছুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেন চৌধুরীর হাতে তুলে দেন। জেলা প্রশাসক বরিশাল। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক বরিশাল, এস, এম, অজিয়র রহমান, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার বরিশাল, আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শহিদুল ইসলাম, সহকারী ব্যবস্থাপক এসএমই ফাউন্ডেশন ঢাকা, নাজমুল হাসান, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোখলেছুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেন চৌধুরীর, আবদুর রব সেরনিয়াবাত প্রেসক্লাব এর সাধারন সম্পাদক, এস এম জাকির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক পুলক চ্যাটার্জীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ইলেকট্রনিক অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ ও এনজিও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক জানান ২৭ ফেব্রুয়ারী মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রালয় থেকে প্রেরিত চিঠি এসে পৌঁছেচে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সেই চিঠি আনুষ্ঠানিকভাবে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোখলেছুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেন চৌধুরীর হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২২৪ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতার তিন কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে বরিশালের মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ সর্বমহলে মধ্যে একটি ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছিল দির্ঘদিন ধরে। অনেকেই মনে করেছিলেন টাকাটি বিগত সময়ের কোন জেলা প্রশাসক আত্মসাত করেছেন। কিন্তু বিষয়টি তা ছিলোনা, তখনকার সময়ে নতুন তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিতভাবে ভাতা প্রদান করতে গিয়ে ৯ মাসের বকেয়া পরে।

এদিকে মন্ত্রনালয়ের মুক্তিযোদ্ধাদের বরাদ্দের ভাতার টাকা আবার মন্ত্রনালয়ে ফিরে যায়। ফলে হিসেবের একটি গরমিল সৃষ্টি হয়। আমি জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরে বিভিন্ন দফতরে যোগাযোগ করি তখন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বরিশালের সাবেক জেলা প্রশাসক এসএম আরিফুর রহমানের সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে বরিশালের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য পুনরায় সেই টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, বরিশালে ৬ হাজার ৪৫৬ জন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতার প্রায় চার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বরিশাল জেলার মোট ভাতাভোগী ছিলেন ৬ হাজার ২৩২ জন।

২০১৫ সালের এপ্রিলে আরও ২২৪ জন যুক্ত হয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪৫৬। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধারা প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে ভাতা পেতেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চের জন্য প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার নামে ব্যাংক হিসাবে ১৫ হাজার টাকা করে জমা হওয়ার কথা। কিন্তু জমা হয় ১০ হাজার টাকা করে। আর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত জমা হয় ১৫ হাজার টাকা করে। ফলে না পাওয়া টাকা নিয়ে আপত্তি ওঠে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে।

এ নিয়ে জাতীয় একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হলে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। তবে এতোদিন পরে জেলা প্রশাসক অজিয়র রহমান এর তৎপরতায় ২২৪ জন মুক্তিযোদ্ধারা টাকা ফিরে পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে মুক্তিযোদ্ধারা।