অনলাইন ডেস্ক :: বরিশালের গৌরনদীতে বিশেষ ক্ষমতা আইনের এক মামলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চার চেয়ারম্যানসহ বিএনপির ১৩ নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার আসামিরা বরিশালের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী হাকিমের আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। পরে জ্যেষ্ঠ নির্বাহী হাকিম মো. ইফতেখার আহমেদ আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াতসহ ২০–দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ কর্মসূচি পালনের সময় ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গৌরনদীর দক্ষিণ মাহিলাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মুরগির খাবারবোঝাই ট্রাকে রাতের অন্ধকারে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা। এ সময় ট্রাকে থাকা চালকসহ মো. মোতালেব শেখ, ইজাইদুল মিয়া ও ফরিদ বিশ্বাস আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় ওই দিন গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জুবায়ের হোসেন বাদী হয়ে বিএনপি–জামায়াতের ৩২ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০ জনকে আসামি করে গৌরনদী থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করেন। মামলাটির তদন্ত চলাকালে চার বছরে দফায় দফায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে। পরে ২০১৮ সালে মামলাটি অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়।
পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরিশাল জেলা সিআইডির পরিদর্শক মো. খন্দকার ফেরদৌস আহম্মেদ ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর উল্লিখিত আসামিসহ বিএনপি-জামায়াতের ২৭ নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযুক্ত আসামিরা দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গতকাল আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান অভিযোগ করেন, শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলার সময় সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও তাদের নিয়োগকৃত এজেন্টরা ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর দায় চাপিয়েছে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের আসামি করে মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় বারবার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করে সবশেষে ‘মনগড়াভাবে’ অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে। তিনি অনতিবিলম্বে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ সবার মুক্তির দাবি করেন।
বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বার্থি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন মিয়া, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সরিকল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু হোসেন, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও মাহিলাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার সাদাত, খাঞ্জাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকন সিদ্দিকুর রহমান, গৌরনদী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. লোকমান হোসেন মৃধা, মাহিলাড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন সিকদার, মাহিলাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মো. সজল সরকার, চাঁদশী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মো. সোবাহান সরদার, উপজেলা যুবদল সদস্য মো. শাহিন সরদার, দেলোয়ার সরদার, কামরুল সরদার, মো. রহিম হাওলাদার ও রুবেল গোমস্তা।