বরিশাল আধুনিক সিটি বা সবুজ নগরী বলতেই যার নামটি উঠে আসে তিনি হলেন বরিশাল সিটি’র সাবেক সফল মেয়র শওকত হোসেন হিরন। হার পকিল্পনায় একটি আধুনিক এবং উন্নয়নের নগর খুঁজে পান বরিশালবাসী। সেই শওকত হোসেন হিরনের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দেশে এবং বিদেশে দীর্ঘ ১৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ২০১৪ সালে আজকের এই দিনে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতেও তাকে ভুলে যাননি নগরবাসী। আজও তাকে স্মরণ করছেন অন্তরের অন্তস্থল হতে। মৃত্যুবার্ষিকীকে ঘিরে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় শোকের ব্যানার এবং বিলবোর্ড টানানো হয়েছে। তাছাড়া পরিবার এবং হিরন অনুসারীদের পক্ষ থেকে মৃত্যুবার্ষিকী পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালীশুরি ইউনিয়নের আড়াইনাও গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশের সাবেক সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুল হাসেম সরদার এবং গৃহিনী জয়নব বেগম দম্পতির চার পুত্র ও ছয় কন্যা সন্তানের মধ্যে তৃতীয় শওকত হোসেন হিরন। বরিশাল নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা খালেদাবাদ কলোনী এলাকায় নানা বাড়িতে ১৯৫৬ সালের ১৫ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। লেখাপড়ার সুবাধে ছোট বেলা থেকেই নানাবাড়ি বরিশাল শহরে বসবাস করতে হয় তাকে।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদের ১৮ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বরিশালের রাজপথে নতুন ধারা ছাত্র সমাজের ব্যানারে নেতৃত্ব দেয়ার মাধ্যমে শওকত হোসেন হিরনের রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ। ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি গঠনের পর শওকত হোসেন হিরন রাজনীতিতে আরো সক্রিয় হন। সে সময় তিনি বরিশাল শহর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৮৫ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শওকত হোসেন হিরন। সেই থেকেই জনপ্রতিনিধিত্ব শুরু তাঁর। জনপ্রতিনিধি হিসেবে বেশ স্বল্পসময়েই বরিশালবাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নেন হিরন।
১৯৯৫ সালে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে এবং সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ- এমপি’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফুলেল তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন শওকত হোসেন হিরন।
যে কারণে খুব সহজেই পেয়ে যান বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ। এরপর বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পান। ছিলেন আন্দোলন সংগ্রামে ১৪ দলের সমন্বয়ক। এরপর বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে শওকত হোসেন হিরন আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। এর পরপরই পাল্টে যায় বরিশাল নগরীর চিত্র।
শিশু বান্ধব নগরী গড়তে নানামুখি উন্নয়নের পাশাপাশি সবুজায়নের ফলে আধুনিক বরিশাল সিটি’র রূপকার খেতাব পান তিনি। শুধু তাই নয়, শওকত হোসেন হিরন মেয়র থাকাবস্থায় দলের কাউন্সিলের বিপুল ভোটে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনিই বরিশাল সিটি সর্বপ্রথম রাজনীতিতে সহবস্থান সৃষ্টি করেন। তৃতীয় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে পরাজয়ের পরে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান হিরন। এমনকি বরিশাল সদর আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি।
এদিকে, শওকত হোসেন হিরন শুধুমাত্র নামেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না। তিনি ছিলেন বরিশালের মানুষের কাছে আস্থা এবং নির্ভরতার প্রতীক। কথা এবং কাজের মেলবন্ধন তিনি তৈরি করে দেখিয়েছিলেন মাত্র সাড়ে চার বছরে। একটি অবহেলি সিটি কর্পোরেশনে আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছিলেন। একটি তিলোত্তমা নগরী উপহার দিতে নগরবাসীর কাছে একজন মুকটবিহিন সম্রাটে পরিণত হন। সেই হিরনের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com