প্রথম ধাপে বরিশালের দুই পৌরসভা নির্বাচন আগামী ২৮ ডিসেম্বর। ওই দুই পৌরসভায় নির্বাচনী আমেজ জমে উঠেছে। ভোটে বিজয়ী হতে দিনরাত ভোটারের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন জেলার বাকেরগঞ্জ ও উজিরপুর পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মী-সমর্থকদের ব্যস্ততা থাকলেও আগ্রহ নেই সাধারণ ভোটারদের। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা তাদের জনপ্রিয়তা মাপার জন্য সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা করলেও আশঙ্কায় বিরোধী প্রার্থীরা। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম বলেছেন, সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। কোথাও কোন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক সেগুলোর সমাধানসহ স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশনা দেয়ার কথা জানান তিনি।
প্রথম ধাপে বরিশালের বাকেরগঞ্জ ও উজিরপুর পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। এই নির্বাচনে বাকেরগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের লোকমান হোসেন ডাকুয়া, বিএনপির এসএম মনিরুজ্জামান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. খলিলুর রহমান। ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৯ জন এবং ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ৯ জন। বাকেরগঞ্জ পৌরসভায় পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৬৭০ জন এবং নারী ভোটার ৭ হাজার ৬৩৪ জন। ৯টি কেন্দ্রের ৪৯টি বুথে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে পরবর্তী মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন তারা।
অপরদিকে উজিরপুর পৌরসভার দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আওয়ামী লীগের গিয়াস উদ্দিন বেপারী, বিএনপির মো. শহিদুল ইসলাম খান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কাজী শহিদুল ইসলাম। এছাড়া ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ৯ জন এবং ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ২৪ জন প্রার্থী। এই পৌরসভায় পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ৯৮৮ জন এবং নারী ভোটার ৫ হাজার ৯৩৭ জন। ৯টি কেন্দ্রের ৪১টি কক্ষে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন তারা।
বাকেরগঞ্জ এবং উজিরপুর পৌরসভায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সকাল থেকে গভীর রাত অবধি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। তারা উঠোন বৈঠক, পথ সভা, গণসংযোগসহ নানাভাবে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন।
তবে যাদের জন্য এতসব আয়োজন সেই ভোটারদের আগ্রহ নেই ভোট নিয়ে। বাকেরগঞ্জ পৌরসভার রূনসী এলাকার বাসিন্দা অলিউর রহমান জানান, ভোটের আগে সব প্রার্থী উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেয়। ভোটের পর আর ভোটারদের খবর রাখে না। ভোটের দিন কি পরিস্থিতি হবে তার উপর নির্ভর করে ভোট কেন্দ্রে যাবেন কি না সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেন তিনি।
বাকেরগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী লোকমান হোসেন ডাকুয়া বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হোক সেটা তিনি নিজেও চান। সেভাবে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া আছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে চান তিনি।
বাকেরগঞ্জে বিএনপির প্রার্থী এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, বিধি অনুযায়ী পৌর এলাকায় মেয়র প্রার্থীদের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প করার কথা। কিন্তু ক্ষমতাসীন প্রার্থী প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাচনী ক্যাম্প করে বিধি লংঘন করলেও নির্বাচন কমিশন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
উজিরপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন বেপারী বলেন, সরকারের উন্নয়ন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জনগন ফের তাকে নির্বাচিত করবে। তিনি পুননির্বাচিত হতে পারলে উজিরপুর পৌরসভাকে মডেল পৌরসভায় উন্নীত করবেন।
উজিরপুরে বিএনপির প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম খান বলেন, ভোট নিয়ে দলীয় উন্মাদনা থাকলেও ভোটারদের আগ্রহ নেই। উৎসবের কোন আমেজ নেই। ক্ষমতাসীনরা বিএনপির কর্মীদের বেনামে ফোন দিয়ে নানা ধরণের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম বলেন, ২০ হাজার ভোটার আছে এমন পৌরসভায় মেয়র প্রার্থীরা সার্বাধিক ১টি নির্বাচনী ক্যাম্প করতে পারবেন। আচরণ বিধি লংঘনসহ প্রার্থীদের যে কোন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।