বরিশালের ছেলে জুবায়ের ফুটবল নিয়ে নৈপুণ্য দেখিয়ে গিনেস বুকে রেকর্ড গড়ায় জেলা প্রশাসন থেকে সংবর্ধনা

:
: ৪ years ago

গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এই নামটির সাথে কমবেশি আমরা সবাই পরিচিত। বিশ্বের অনেক দেশের মানুষ এই বুকে নাম লিখিয়েছেন, পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ ও। তবে এবার ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ভেঙ্গে নতুন বিশ্ব রেকর্ডস গড়েছে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজ এর শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান জুবায়ের। গত ৩০ জুলাই দুপুরে জুবায়ের এর বাড়িতে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস থেকে চিঠি আসে। সেই খবর মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়া এবং খবরের শিরোনামে বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক বরিশাল এস, এম অজিয়র রহমান এর উদ্যোগে জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে আজ ৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বরিশালের অফিস কক্ষে আশিকুর রহমান জুবায়ের কে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এ সময় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানান জেলা প্রশাসক বরিশাল এস, এম, অজিয়র রহমান।

তাকে জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে গিফট এবং নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি বরিশাল প্রশান্ত কুমার রায়, ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পরিচালক আলমগীর খান আলো, জেলা ক্রীড়া অফিসার বরিশাল মোঃ হুসাইন আহম্মেদ, প্রবেশন অফিসার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল সাজ্জাদ পারভেজ, আশিকুর রহমান জুবায়ের ও তার বাবা জালাল আহম্মেদেসহ আরও অনেকে। পরে জুবায়ের তার ফুটবল দিয়ে নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। ছোটবেলায় ফুটবলের নেশায় পেয়ে বসে। ফুটবল খেলে কিছু হতে হবে সেজন্য নয়, শুধুই ভালোবাসা থেকে চর্চা শুরু। শুরুতে ঘরের সামনের মাঠে ফুটবল খেলে কাটতো অবসর। ধীরে ধীরে পরিণত হয় তা অভ্যাসে। আর এখন ফুটবল ছাড়া চলতেই পারেন না। পরিবারের চার ছেলের মধ্যে সবার ছোট আশিকুর রহমান জুবায়ের। তার ফুটবল প্রেম বিশেষ গুরুত্বও পায়নি পরিবারে।

কথাগুলো বলছিলেন জুবায়ের। আবেগ ও উৎসাহে নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলেন না তিনি। আর গত ৩০ জুলাই দুপুরের পর থেকে জুবায়ের ফুটবল প্রেম আলোচিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। কারণ, ওইদিন নদী বেষ্টিত ঝালকাঠি জেলা শহরের মসজিদ বাড়ি রােডের বাসিন্দা ঠিকাদার জালাল আহম্মেদের বাড়িতে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস থেকে চিঠি আসে। সেখানে জালাল আহম্মেদের ছেলে আশিকুর রহমান জুবায়েরের বিশ্বজয়ের স্বীকৃতিপত্র। চিঠিতে লেখা, নেক থ্রো অ্যান্ড ক্যাচেস ক্যাটাগরিতে মিনিটে ৬৫ বার বল নিক্ষেপ ও ধরে ফেলে বিশ্ব রেকর্ড ভেঙেছেন বাংলাদেশের জুবায়ের। তারপর থেকেই অভিনন্দন বার্তায় ভাসছেন তিনি। দক্ষিণাঞ্চলের অক্সফোর্ডখ্যাত সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগে অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তিনি। স্বপ্ন দেখেন, আরও বিশ্ব রেকর্ড গড়ার। ‘ফুটবল খেলা ও ফুটবল নিয়ে কসরত আলাদা বিষয়। তার ফুটবল তারকা বা অনুপ্রেরণা হলেন ফুটবল ওয়াল্ডের সুপারস্টার রোনালদিনহো। তার খেলা দেখে ফুটবলের প্রেমে পড়েন। তবে পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়েছেন ফুটবলের ফ্রি স্টাইল কসরতে।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৫ নভেম্বর জার্মানির মার্কেল গুর্ক (Marcel Gurk) যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে নেক থ্রো অ্যান্ড ক্যাচেস ক্যাটাগরিতে মিনিটে ৬২ বার বল নিক্ষেপ ও ধরে ফেলে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন। তার রেকর্ড ভেঙে তিনি মিনিটে ৬৫ বার নেক থ্রো অ্যান্ড ক্যাচেসে সফল হই। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস চেষ্টাসাধ্য কঠিন বিষয়। এজন্য নিয়মিত পরিশ্রম ও একনিষ্ঠ মনোযোগ দরকার। নতুন নতুন ইভেন্টে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ব রেকর্ড গড়বেন। তাতে শুধু ব্যক্তি সুনাম নয়, দেশের নাম ছড়িয়ে পড়বে সারা বিশ্বে। জুবায়ের বলেন, ‘আমি চাই আমার রেকর্ডটি নতুন কেউ ভাঙুক। তাতে করে দেশের ফুটবল সর্ম্পকে মানুষের আগ্রহ বাড়বে।