বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন। এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো উপজেলার ৯৯ কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনের আগের দিন রবিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনসুর আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
এতে তিনি অভিযোগ করেন, উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ তার বিরুদ্ধে কাজ করছেন। এমপি পংকজনাথের নির্দেশে উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং ১৫টি ইউনিয়নের দলীয় নেতাকর্মীরা দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মাহফুজ আলমের পক্ষে কাজ করছেন। এ কারণে নির্বাচনী প্রচারণায় দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে পাননি মুনসুর।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, এমপি পংকজ নাথ আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত উপজেলার আন্ধারমানিক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মাহফুজ আলমকে নৌকার বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছেন। প্রচার-প্রচারণা মিছিলসহ সব নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে মাহফুজের ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে কাজ করছেন এমপি পংকজের লোকজন। এছাড়া মেহেন্দিগঞ্জের কোথাও নৌকা প্রতীকের পোস্টার-ব্যানার লাগাতে দেওয়া হয়নি। দলে অনুপ্রবেশকারীদের দিয়ে নৌকার কর্মী সমর্থকদের মাঠ ছাড়া করা হয়েছে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুনসুর আহম্মেদকে ভোটের মাঠে পাওয়া যাচ্ছে না- প্রধান নির্বাচন সমম্বয়কারী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন খানের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে মুনসুর আহমেদ বলেন, এমপির লোকজনের হামলা-মামলার ভয়ে নৌকার কর্মীরা এলাকায় থাকতে পারছেন না। মুনসুর আহমেদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিনি শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকবেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করতে এমপি পংকজনাথ ও তার অনুসারীরা সব ধরনের নীল নকশা করে রেখেছেন।
তবে বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মনগড়া ও মিথ্যা বলে দাবি করে বরিশাল বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস সহ কিছু নেতা তার বিরুদ্ধে ৫ বছর যাবৎ ষড়যন্ত্র করছেন। টাকা খেয়ে তারা দুর্বল প্রার্থী মনোনয়ন দেন আর হেরে গেলে এমপির (পংকজ) দোষ দেন। যারা ভোটের আগের দিন সংবাদ সম্মেলন করেন তারা ভোটের জন্য আগ্রহী না। তারা কেন নির্বাচনে আসেন আমি বুঝিনা।
উল্লেখ্য, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ৯৯ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ১৮ হাজার ৮৮৬ জন। এই নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খোরশেদ আলম ভুলু এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন রহমান বিনতে রোমানা।
এছাড়া চেয়ারম্যান পদে অন্য প্রার্থীরা হলেন- বিএনপির গোলাম ওয়াহিদ (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির হানিফ মিয়া (লাঙ্গল), মশিউর রহমান পলাশ (আনারস) ও রফিকুল ইসলাম (দোয়াত-কলম)।
এদিকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটাানিং কর্মকর্তা নুরুল আলম জানান, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন কর্মকর্তাসহ ১০ জন পুলিশ, ১২ জন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। চার প্লাটুন করে বিজিবি ও কোস্টগার্ড রিজার্ভ ফোর্স হিসাবে মেহেন্দিগঞ্জে থাকবে। প্রতি তিনটি কেন্দ্রের জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র্যাবের টহল টিম কাজ করবে।