বরিশালের ঐতিহ্য মিয়াবাড়ি মসজিদ

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

ঐতিহ্যবাহী মিয়াবাড়ি মসজিদ। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটি শুধু বরিশালের নয়, বাংলাদেশের প্রাচীন মসজিদগুলোর অন্যতম। বরিশাল সদর উপজেলার উত্তর কড়াপুর গ্রামে অবস্থিত দ্বিতল মসজিদে এখনো নিয়মিত নামাজ আদায় করেন নামাজিরা। এ ছাড়া বরিশালে আসা পর্যটকরা আসেন ঐতিহ্যপূর্ণ মসজিদটি দেখতে।

১৮ শতকে নির্মিত মোগলরীতির চারকোনা এই মসজিদের উপরিভাগে তিনটি ছোট আকারের গম্বুজ রয়েছে। মাঝের গম্বুজটি আকারে কিছুটা বড়। মসজিদের সামনের দেয়ালে চারটি মিনার এবং পেছনের দেয়ালে চারটি মিনারসহ মোট আটটি বড় মিনার রয়েছে। এ ছাড়া সামনে ও পেছনের দেয়ালের মধ্যবর্তী স্থানে আরো ১২টি ছোট মিনার রয়েছে। মসজিদের উপরিভাগ (সিলিং) ও সবগুলো মিনারে নিখুঁত ও অপূর্ব সুন্দর কারুকাজ খচিত।

উঁচু ভিত্তির ওপর নির্মিত মিয়াবাড়ির এ মসজিদের পূর্ব দিকে রয়েছে বিশালাকারে একটি দীঘি। দীঘির পানিতে মসজিদের প্রতিবিম্ব যেকোনো মানুষকে মুগ্ধ করে। বর্তমানে মসজিদটির দ্বিতীয় তলায় নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে দ্বিতীয় তলায় উঠতে বাইরে থেকে দোতলা পর্যন্ত একটি প্রশস্ত সিঁড়ি রয়েছে। আর নিচতলায় কয়েকটি কক্ষে বর্তমানে থএকটি মাদরাসার কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া সিঁড়ির নিচের ফাঁকা জায়গায় রয়েছে দু’টি কবর।

প্রতিদিন মসজিদটি দেখতে অনেকে এলেও যাতায়াতে তাদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়। শহরের নবগ্রাম রোড থেকে মসজিদ পর্যন্ত সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হন পর্যটকরা। তবে এ পথে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা বা ইঞ্জিনচালিত থ্রি-হুইলারযোগে যাতায়াত করা যায়।

মিয়াবাড়ি মসজিদের মুসল্লি আর্শেদ আলী সিকদার (৭০) বলেন, মোগল আমলের এ স্থাপনাটি দেখতে অনেক মানুষই ছুটে আসেন। কিন্তু যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম সড়কটি সংস্কার না করায় যাতায়াতে ভোগান্তি বেড়েছে।

মিয়াবাড়ি মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা হায়াত মাহমুদ নামে এক ব্যক্তি। তৎকালীন ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নির্বাসিত হন তিনি। এ সময় তার জমিদারিও কেড়ে নেয়া হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর পর দেশে ফিরে তিনি এলাকায় দু’টি দীঘি ও দ্বিতল এই মসজিদটি নির্মাণ করেন।

মসজিদ কমপ্লেক্সে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী ও বরিশাল থেকে প্রকাশিত একটি ম্যাগাজিনের নির্বাহী সম্পাদক তৈয়বুর রহমান আজাদ এবং সহযোগী সম্পাদক জলিল সিদ্দিকী সবুজ বলেন, ঐতিহ্যের সাক্ষী এই মসজিদটি খুবই দৃষ্টিনন্দন। এটির ঐতিহ্য সংরক্ষণে প্রতœতত্ত্ব বিভাগের দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।