বরিশালের এমপি-মন্ত্রীদের গাড়ি আটকে দিল শিক্ষার্থীরা

:
: ৬ years ago

বরিশালের তিন এমপি-মন্ত্রীর গাড়ি আটকে দিয়েছে আন্দেলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ৯ দফা দাবী বাস্তবায়ণের আন্দেলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের গাড়ি আটকে রাখে। এ সময় এমপি ও মন্ত্রীদের গাড়ি রেখেই চলে যেতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেলে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত সংসদ ভবন ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। গাড়ির কাগজপত্র ছাড়া সংসদে ঢুকতে না পেরে বাতিল করা হয়েছে সংসদীয় কমিটির বৈঠকও। বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভের পঞ্চম দিনে শিক্ষার্থীরা আটকে দিলেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর গাড়ি। বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির ১৫ নম্বরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এক মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে এক শিক্ষার্থীকে বলতে শোনা যায়, আমরা এখন ধানমণ্ডি ১৫-তে ইবনে সিনার সামনে, আমরা একটা গাড়ি ধরেছি, সেটা হচ্ছে মন্ত্রীর।

গাড়ির চালকের কোনো লাইসেন্স নেই। আমরা মন্ত্রী স্যারের সঙ্গে কথা বলছি। এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা মন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, স্যার অ্যালাউ করল ক্যান? যে চালকের লাইসেন্স নেই, তাকে কেন গাড়ি চালাতে অনুমতি দিয়েছেন তিনি, আমরা স্যারের কাছে তা জানতে চাই। এরপর মন্ত্রী সাদা রঙের গাড়িটি থেকে নেমে যান। এ সময়ে উল্লাস প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, এই তালি হবে, তালি হবে। শিক্ষার্থীরা চিৎকার করে বলতে থাকেন, শাবাশ… শাবাশ…। মন্ত্রী গাড়ি থেকে বের হয়ে হাঁটা শুরু করলে শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে স্লোগান দিয়ে ওঠেন, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ইউ ওয়ান্ট জাস্টিস। ভিডিওতে দেখা যায়, এরপর মন্ত্রী কালো রঙের আরেকটি গাড়িতে উঠে নিজের গাড়িটি সেখানে ফেলে রেখে যান। রাজধানীর শনির আখড়ায় গাড়ির লাইসেন্স দেখাতে না পারায় বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথকে অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা।

সাংসদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ইন্স্যুরেন্স আপডেট না থাকার অভিযোগে পুলিশ মামলা দায়ের করলে সাংসদের গাড়িটি ছেড়ে দেন শিক্ষাথীরা। এদিকে অবরুদ্ধ সাংসদকে মুক্ত করতে কদমতলী থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মমিনুল ইসলাম রাজীব এগিয়ে আসলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়লে এক পর্যায়ে তাকে বেদম মারধর করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত শনিরআখড়া দনিয়া স্কুলের সামনে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। সংসদ ভবনে প্রবেশকালে পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনকে আটকে দেয়। সংসদ ভবনে গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মিটিং ছিল। পরে মিটিং ক্যানসেল করা হয়। এর আগে সোমবার বাংলামোটরে উল্টোপথে চলতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে পড়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের গাড়ি। মন্ত্রীর সামনেই শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়- ‘আইন সবার জন্য সমান’।