বরগুনায় শতাধিক পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। কখনও খোলা আকাশের নিচে, কখনও তাবু টানিয়ে, আবার কখনও ভাড়া ঘরে অথবা ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবনেই চলছে পাঠদান। এতে প্রাণহানিসহ একের পর এক ঘটছে দূর্ঘটনা। আতঙ্ক বিরাজ করছে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে। শিক্ষা বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনের দাবি, এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বরগুনার তালতলী উপজেলার ৫নং ছোটবগী পি.কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গেলো ৬ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্লাস চলাকালীন একটি কক্ষের গ্রেড বিম ধসে পড়ে নিহত হয় মানসুরা আক্তার নামে তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রী। এ ঘটনায় আহত হয় অন্তত ৫ জন। মর্মান্তিক এ ঘটনার পর বিদ্যালয় ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সিলগালা করে দেয় প্রশাসন। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির অভিযোগ, ভবনটি নির্মাণের এক বছরের মাথায় গ্রেড বিমে ফাটল ধরে। এরপর মাঝে মধ্যে কোনভাবে সংস্কারের মাধ্যমে ভবনটিতে চলে আসছিল শিক্ষা কার্যক্রম।
এ ঘটনার রেস কাটতে না কাটতেই গেলো ৯ এপ্রিল সকালে ক্লাস শুরুর আগে আকস্মিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে বরগুনা শহরের আমতলা সড়কে অবস্থিত ১৬নং মধ্য বরগুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের একটি বিমের একাংশ। তবে শুধু দুটি এ বিদ্যালয়ই নয়, জেলার শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এসব ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ভবন চিহ্নিত করে নতুন ভবন নির্মানের দাবি অভিভাবকদের। জেলা শিক্ষা বিভাগের এই কর্মকর্তা জানালেন, যেসব বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত অথবা ঝুঁকিপূর্ণ আছে সেগুলোর তালিকা তৈরীর কাজ চলছে। বরগুনা জেলা উপকূলবর্তী হওয়ায় লবনাক্ততা ও আবহাওয়ার কারণে ভবনগুলো নির্ধারিত সময়ের আগেই পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে বলে জানান এলজিইডির এই কর্মকর্তা। যেসব বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে সেগুলোতে পাঠদানের বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক। বরগুনা জেলায় ৮০১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের মধ্যে ১০৮টি রয়েছে পরিত্যক্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ।