বরগুনায় নেশার টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন!

:
: ৫ years ago

অনলাইন ডেস্ক// বরগুনার আমতলীতে নেশার টাকা না পেয়ে মাদ্রাসা ছাত্রী স্ত্রী খাদিজা আক্তারকে নির্যাতন করে স্বামী মহিবুল ইসলাম তনু। ঘটনা ঘটেছে আমতলী পৌর শহরের ওয়াবদা সড়কে শুক্রবার বিকেলে। আহত খাদিজাকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

জানাগেছে, ২০১৬ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার উত্তর চাকামইয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান তালুকদারের মাদ্রাসা পড়ুয়া কন্যা খাজিদা আক্তারকে বরগুনা পৌর শহরের আমতলা সড়কের হাতেম আলী আকনের ছেলে মহিবুল ইসলাম তনুর সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে দুই লক্ষ টাকা , দুই ভরি স্বর্নালংকার ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেয়। কিন্তু মাদকসেবী মহিবুল বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই নেশার টাকা জন্য স্ত্রী খাজিদাকে নির্যাতন শুরু করে। মেয়ের সুখের দিকে তাকিয়ে বাবা হাবিব তালুকদার জামাতাকে প্রায়ই টাকা দিয়ে আসছে। গত দুই মাস পূর্বে আমতলী পৌর শহরের ওয়াবদা সড়কে বাসা ভাড়া নেয় মহিবুল। ওই বাসায় তারা বসবাস করে আসছে। খাজিদা আমতলী বন্দর হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে এ বছর আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। শুক্রবার দুপুরে স্ত্রী খাজিদার কাছে নেশার টাকা চায় মহিবুল। কিন্তু নেশার টাকা দিতে অস্বীকার করে খাজিদা। টাকা না পেয়ে মহিবুল বাসা থেকে বের হয়ে যায়। দুই ঘন্টা পরে বাসায় এসে স্ত্রী খাজিদাকে ঘরের মধ্যে আটকে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায় খাজিদা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে স্বামী মহিবুল অজ্ঞান স্ত্রী খাদিজাকে ঘরের বাহিরে ফেলে রেখে ঘরে তালা দিয়ে চলে যায়।

স্থানীয় লোকজন এসে খাদিজার এ অবস্থা দেখে স্বজনদের খবর দেয়। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খাজিদার অভিযোগ বিয়ের দুই বছরে নেশার টাকা না পেলে বিভিন্ন অযুহাত এনে প্রতিদিন নির্যাতন করে মহিবুল। খবর পেয়ে শনিবার পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে নির্যাতিতা খাজিদার খোঁজ খবর নেয়।

 

শনিবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখাগেছে, খাদিজা শরীরের বিষম ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। তার ডান চোখের নিচে রক্তাক্ত জখমের চিহৃ এবং তার মুখমন্ডল ফুলা রয়েছে। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার গৌরাঙ্গ হাজড়া বলেন, খাজিদার ডান চোখের নিতে রক্তাক্ত জখম ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে।

আহত খাজিদা জানান, বিয়ের দুই বছরের এমন কোন দিন নেই, যেই দিন আমাকে নির্যাতন করেনি। যখনই নেশার টাকার প্রয়োজন হয় তখনই শুরু করে নির্যাতন। সে আরো জানান, শুক্রবার দুপুরে আমার কাছে নেশার টাকা চায়। আমি এ টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

স্বামী মহিবুল ইসলাম তনু মুঠোফোনে (০১৭০৫……) সাংবাদিকদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তিনি রাগান্বিত হয়ে মোবাইল ফোন কেটে দেয়।

আমতলী থানার ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।