#

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানসহ প্রশাসনের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেওয়ানি আদালতে মামলা হয়েছে।

রোববার বরগুনার সহকারী সিনিয়র জজ তারিক শামস মামলাটি গ্রহণ করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের নথি তলব দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

অন্য বিবাদীরা হলেন- বরগুনা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাওসার উদ্দিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজাম উদ্দিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সরকারি কৌঁসুলি মো. মজিবর রহমান।

মামলার বাদী বরগুনা নজরুল ইসলাম সড়কের ব্যবসায়ী আবুল কালাম। তিনি বলেন, আমি নিষেধাজ্ঞা চেয়েছিলাম। আদালত বিবাদীদের কারণ দর্শানের নোটিশ দিয়েছেন।

আবুল কালাম আরও বলেন, বরগুনা শহরের এসএ এবং আরএস খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত ৩২ একর জমি খাস খতিয়ানে নিয়ে এক বছরের বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন আদালত ও ভূমি অফিস বেশ কয়েকটি মামলা দিয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। জমির মালিকরা প্রায় ৭০ থেকে ১০০ বছর ধরে জমিতে পাকা ভবন তৈরি করে বসবাস করে আসছে।

জমির মালিকদের রেকর্ড বাতিল করে শহরের সব জমি খাস খতিয়ানভুক্ত করার জন্য ভূমি অফিসকে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। সরকার আমাদের ব্যক্তি মালিকানা জমি নিয়ে গেলে আমাদের পথে বসতে হবে। সরকার চাচ্ছে আমাদের জমি খাস খতিয়ানে নিয়ে আবার আমাদের কাছে বন্দোবস্ত দেবে। সেটি আমরা হতে দিতে পারি না।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর শহরের জমির মালিক গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, আমিসহ শহরের শত শত জমির মালিকরা ৭০-৮০ বছর কিংবা তার অধিক সময় ধরে বসবাস করে আসছি। হঠাৎ করে জেলা প্রশাসন ব্যবসায়ীদের মামলা দিয়ে হয়রানি করতে পারেন না। হয়রানির কারণে শহরের এক ব্যবসায়ীর মা স্ট্রোক করেছেন।

তিনি আরও বলেন, বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার উদ্দিন এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নিজাম উদ্দিন কৌশলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।

জেলা শহরের সব স্থাপনা, ঘরবাড়ি, মার্কেট, দোকানপাট এসএ খতিয়ান ও ১৯৬২ সাল থেকে দখলীয় সৃজিত খতিয়ানের ভূমির মালিকদের ১নং খাস খতিয়ানে নেওয়ার জন্য গোটা শহরের ৩২ একর ভূমি খাস খতিয়ানভুক্ত করার জন্য জনসাধারণকে নোটিশ দিয়ে মামলা করেছে প্রশাসন। এটা তাদের ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে বরগুনার সহকারী কমিশনার নিজাম উদ্দিন বলেন, ৩২ একর ভূমি খাস খতিয়ানে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সবাইকে একে একে নোটিশ দেওয়া হবে। আমার অফিসে শুনানি হবে।

পরে কেউ ক্ষুদ্ধ হলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অফিসে শুনানি করতে পারবেন। এরপর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে শুনানি হবে। সেখান থেকে ভূমি কমিশনেও যাওয়ার সুযোগ রয়েছে তাদের।

আদালতে দেওয়ানি মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আদালত আমাদের যে নির্দেশনা দেবেন তা আমাদের মানতে হবে। আদালত স্থগিত করলে আমরা প্রক্রিয়া বন্ধ রাখব।

বরগুনার সরকারি কৌঁসুলি মো. মজিবর রহমান বলেন, হাট-বাজারের জমি সব সময় সরকারের নিয়ন্ত্রণে। এই জমি স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত দেওয়া জেলা প্রশাসনের নেই। হাট বাজারের জমি প্রতি বছর বন্দোবস্ত দেওয়া যায়। এই জমি খাস খতিয়ানে গেলে পূর্ববর্তি মালিকদের কোনো ক্ষতি হবে না।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, আদালতে মামলা হয়েছে জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। আমাদের ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। যে কেউ মামলা করতে পারেন বা করবেন। আদালত যে রায় দেবেন সেটি সবাই মানতে বাধ্য।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন