বরগুনায় উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ জোছনা উৎসব অনুষ্ঠিত

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

বরগুনায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ জোছনা উৎসব।

বরগুনার অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে জোছনাপ্রেমী মানুষের জন্য এ উৎসবের আয়োজন করে বরগুনা জেলা প্রশাসন।

 

বৃহস্পতিবার বরগুনার তালতলীতে শুভ সন্ধ্যায় এ উৎসব উদযাপিত হয়। দেশ বিদেশের হাজারো পর্যটক ভিড় জমান এ উৎসবে।

 

একদিকে দীর্ঘ ঝাউবন, আরেক দিকে তিনটি নদী খরস্রোতা পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর বিশাল জলমোহনা। নদী যেখানে সাগরে মিশেছে ঠিক সেখানে; নবগঠিত তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের স্নিগ্ধ বেলাভূমি ‘শুভ সন্ধ্যার’ বিস্তির্ণ বালুচরে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সব মিলিয়ে নদ-নদী আর বন-বনানীর এক অপরূপ সমাহার- শুভ সন্ধ্যার চর! ভরাপূর্ণিমায় এখানেই জল-জোছনায় একাকার হয় জোছনাবিলাসী হাজারো মানুষ।

 

বরগুনার প্রধান তিনটি নদী পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর যেখানে সাগরে মিশেছে ঠিক সেখানেই তালতলী উপজেলার স্নিগ্ধ বেলাভূমি শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত। একদিকে সীমাহীন সাগর, আরেকদিকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট টেংরাগিড়ি। সবমিলিয়ে নদ-নদী আর বন-বনানীর এক অপরূপ সমাহার- শুভ সন্ধ্যা সৈকত। এখানেই দিনব্যাপী জলজোছনায় একাকার হবে জোছনাবিলাসী হাজারো মানুষ। এটি উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ জোছনা উৎসব বলে দাবি করেছেন আয়োজকরা।

 

সকাল ১১টায় বরগুনা নৌবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে এ জোছনা উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। এ সময় তিনি বলেন, পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় বরগুনার নয়নাভিরাম সৌন্দর্যকে দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে প্রতিবছর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।

 

বরগুনার আমতলী ও পাথরঘাটা উপজেলা থেকেও একযোগে যাত্রা শুরু করে একাধিক লঞ্চ। বেলা আড়াইটায় শুভসন্ধ্যা পৌঁছে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন বরগুনা-০১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। এরপর উম্মুক্ত সৈকতে দলীয় নৃত্যের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 

এ উৎসবকে ঘিরে আয়োজন করা হয়েছে দেশীয় খেলাধুলা, বাউল গান, পুঁথি পাঠ, পুতুল নাচ, যাদু প্রদর্শণী, যাত্রাপালা, হয়লা গান, রাখাইন নৃত্যসহ আনন্দ বিনোদনের নানা কর্মসূচি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে ফানুস উড়িয়ে এবং দ্বীপালী ভাসিয়ে এ উৎসবের সমাপনী ঘোষণা করবেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।

 

জোছনা উৎসবের উদ্যোক্তা সাংবাদিক সোহেল হাফিজের নেতৃত্বে ২০১৫ সাল থেকে জেলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক অঙ্গনের একদল জোছনাপ্রেমী মানুষ বরগুনার বিষখালী নদীর মোহনায় এ জোছনা উৎসবের শুরু করেন। এরপর থেকে প্রতিবছরই জোছনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বাড়ছে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যাও।

 

২০১৮ সালে বরগুনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ উৎসবটি আরও বড় পরিসরে পালিত হয়। গত বছর এ অনুষ্ঠানে প্রায় ৫০ হাজার দর্শনার্থী অংশ নেয়।

 

এ উৎসব উপলক্ষে শুভ সন্ধ্যা সৈকতকে বর্ণাঢ্য সাজসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। উৎসবস্থল ঘিরে নেয়া হয়েছে র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, রোভার স্কাউট, বিএনসিসিসহ আনসার ও গ্রাম পুলিশের সমন্বয়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।