বরগুনায় দাদির করা মামলায় কারাগারে থাকা সেই দুই শিশুর মায়ের জামিন শুনানি হয়নি। রোববার (১৮ জুলাই) ওই দুই শিশুর মা আনিতা জামানের জামিনের জন্য বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করা হয়। পরে আদালত আগামীকাল সোমবার (১৯ জুলাই) এ আবেদন শুনবেন বলে জানান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বিবাদীপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম সিকদার।
নজরুল ইসলাম সিকদার বলেন, আনিতা জামানের জন্য আজ সকালে আমি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন করি। পরে আদালত এ আবেদন আগামীকাল সোমবার শুনবেন বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, আশা করি অসহায় এই দুই শিশুর মায়ের জামিন শুনানি শেষ আগামীকালই আদেশ দেবেন আদালত।
এর আগে ১৫ জুলাই দাদি আলেয়া বেগমের করা মামলায় আদালত দুই শিশু আলিফ (১৩) ও দুগ্ধপোষ্য গালিফের (২) মা আনিতা জামানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
একই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে পলাতক দুই শিশুর বাবা মনিরুজ্জামান জুয়েল।
আলিফ ও গালিফের দাদার বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পতাকাটা ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামে। আর নানার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। দাদাবাড়ি স্বজন ছাড়া বরগুনায় আলিফ ও গালিফের আর কোনো আত্মীয়স্বজন নেই বরগুনায়।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৭ জুলাই) বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে একমাত্র দুগ্ধপোষ্য শিশু ভাই গালিফকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়া মেধাবী শিক্ষার্থী আলিফ মায়ের মুক্তির দাবি জানিয়ে বরগুনার টাউন হল এলাকায় রাস্তায় অবস্থান নেয়। এ সময় সে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে।
সকাল গড়িয়ে দুপুর, পরে বিকেল হলেও অসহায় এই দুই শিশুর পাশে দাঁড়ায়নি কেউ। দুপুরের পর কে বা কারা তাদের নিয়ে যান বরগুনার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে।
এরপর সারাদিনের তপ্ত রোদে অভুক্ত দুই সহোদরের স্থান হয় জেলা প্রশাসকের সামনের বটগাছের নিচে। সন্ধ্যা নেমে এলেও এগিয়ে আসেননি কেউ। ততক্ষণে ক্লান্ত আর অভুক্ত গালিফ বড় ভাই আলিফের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে বটগাছের নিচে।
মানবেতরভাবে পুরো একটি দিন যাপনের পরও কেউ এগিয়ে আসেনি অসহায় দুই শিশুর পাশে। অবশেষে সন্ধ্যায় এই দুই শিশুকে নিজ বাসায় নিয়ে যান স্থানীয় সাংবাদিক অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজ।