বরগুনার বেতাগী পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, রাজপথের এক সময়ের উজ্জ্বল নক্ষত্র আবুল কাশেম (৭৬) আজ সোমবার সকাল ৬ টা ১৫ মিনিটে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বার্ধক্যজনিত কারণে শারীরিক বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
আজ বিকেল সাড়ে ৫ টায় বেতাগী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
এরপর জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ বেতাগী সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসন্ডা গ্রামের বাড়ি পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। বেতাগী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন এর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, বেতাগী পৌরসভার মেয়র , কাউন্সিলর এবং কর্মচারিবৃন্দ তিন দিনের শোক ঘোষণা করছে।
১৯৭১ সালের রণাঙ্গণের মুক্তিযুদ্ধের জন্য ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। এতে ৯ নম্বর সেক্টর দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়ক থেকে খুলনার দক্ষিণাঞ্চল এবং সমগ্র বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা নিয়ে এ সেক্টর গঠিত।
এই সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর আব্দুল জলিল। এর সাব-সেক্টর ছিল বরগুনার বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়ায়। আবুল কাশেম এই বুকাবুনিয়া সাব- সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিকবার সম্মূখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করেন।
তিনি বেতাগী সরকারি কলেজ, সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বেতাগী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদের একাধিকবার সভাপতি এবং সদস্যপদে দায়িত্ব পালন করেন।
এরশাদ ও খালেদা বিরোধী আন্দোলনের বেতাগী রাজপথের লড়াকু সৈনিক ছিলেন। নির্ভিক এ জননেতা সকল সামাজিক আন্দোলন ও কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাঁর কফিনে হাজারো মানুষের শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায় সিক্ত হলেন।
বেতাগীর সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠণের নেতৃবৃন্দ তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।