স্টিভেন জনসন সিনড্রোম’ নামে বিরল এক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহদী। তিনি ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগে ৪র্থ বর্ষের ছাত্র।
ঢাকার ফ্রেন্ডশিপ স্পেশালাইজড হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) ভোরে তার মৃত্যু হয়। আবদুল্লাহ আল মাহদীর বাড়ি মৌলভীবাজারের।
তার আকস্মিক মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে রুহের মাগফেরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ছাদেকুল আরেফিন।
আবদুল্লাহ আল মাহদীর বন্ধু মিসাল বিন সলিম জানান, ৬-৭ দিন আগে হালকা ঠান্ডা, জ্বর, চোখ লাল আর শরীরে ফোসকা পড়া শুরু হয়েছিল।
ডাক্তার দেখানোর পরে পক্স হিসেবে আইডেন্টিফাই করে। সেভাবেই চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু পরের দিন থেকে জ্বর বাড়া শুরু করে, শরীরে ফোসকাও বেড়ে যায়।
১০৩-৪ ডিগ্রি জ্বর থাকার কারণে জামালপুর মেডিক্যালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে ইমার্জেন্সি ডাক্তাররাও পক্স হিসেবেই আইডেনটিফাই করেন।
পরে সেই অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট দিয়ে রিলিজ দেয়। রাতে আবার সেই ১০৪/৫ ডিগ্রি জ্বর। ডাক্তারের সঙ্গে আলাপ করে ঢাকা আনা হয়।
ঢাকায় অনেক হাসপাতাল ঘোরাঘুরির পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফ্রেন্ডশিপ স্পেশালাইজড হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আইসিইউতে অ্যাডমিট করা হয়।
তখন ডাক্তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে বলেন এই রোগের নাম স্টিভেন জনসন সিনড্রোম। খুব রেয়ার একটা রোগ।
জিনগত সমস্যার কারণে মাঝে মধ্যে হয়। আর লক্ষণ অনেকটাই পক্সের মতো তাই সহজে আইডেন্টিফাই করা যায় না।
জানা যায়, স্টিভেন জনসন সিনড্রোম তীব্র প্রতিক্রিয়া সম্বলিত (hypersensitivity) একটি বিরল রোগ, যাতে সাধারণত ১০ লাখে ২-৭ জন ব্যক্তি আক্রান্ত হন।
এতে ত্বক ও মিউকাস ঝিল্লি আক্রান্ত হয়। দেহের চামড়া, ঠোঁট, মুখ গহ্বর, কণ্ঠ, অন্ত্র, পায়ু, মূত্রনালি, চোখ ইত্যাদি সবকিছুই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া ফোসকা পড়ে যায়। জীবাণু সংক্রমণও হতে পারে।
শরীরের বাইরে যতটা আক্রান্ত দেখা যায়, এ রোগে ভেতরেও তেমন আক্রান্ত হয়। কয়েক দিনের মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গ যেমন- কিডনি, ফুসফুস, যকৃত অকেজো হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হতে পারে।