ববির প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৬ সদস্য আটক

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) বিজ্ঞান বিভাগের প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস করে ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহকালে ছয়জনকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আটকৃতদের মধ্যে একজন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ও তিনজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র রয়েছেন।  —শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর সোয়া ২টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কার্যালয়ের ষষ্ঠ তলার সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

ব্রিফিংয়ে পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই আশীষ পালের নেতৃত্বে একটি টিম সকালে বরিশালের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আর্শেদ আলী কন্ট্রাক্টর গলির নাহার ম্যানসনে অভিযান চালায়।

পরে যেখানে বাসা ভাড়া নেয় আটককৃত প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্য মুয়ীদুর। ওই বাসায় বিজ্ঞান বিভাগের প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তরপত্র সরবরাহ করার জন্য ভাড়াটিয়া মুয়ীদুরসহ ছয়জন অবস্থান করছিলো। যাদের কাছ থেকে অভিযানের সময় পাঁচটি ইলেট্রো ম্যাগনেটিক ব্লুটুথ ইন্ডাকসন (ইয়ারফোন), পাঁচটি এটিএম কার্ড সদৃশ ইলেকট্রনিক ডিভাইস, প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজের ব্যবহৃত ১১টি মোবাইল সিম এবং দু’টি অতিরিক্ত সিম পাওয়া যায়।

পুলিশ কমিশনার জানান, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এটিএম কার্ড সদৃশ ইলেকট্রনিক ডিভাইসে সিম ব্যবহার করে সুক্ষ ইয়ারফোনের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসকরে উত্তরপত্র তৈরিতে সহায়তা করতো ওই চক্র। যে চক্রটি ইতোপূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‌‌’ক’ ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ সারাদেশে এ ধরনের কার্য পরিচালনা করে আসছিলো। আটককৃতদের মধ্যে মো. মারুফ হোসাইন মারুফ নামে সিআইডির ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের এক সদস্য।তিনি বলেন, পরীক্ষার আগ মুহূর্তে আটকের কারণে চক্রের উদ্দেশ্য হাসিল হয়নি। তবে এদের কাছ থেকে লাখ টাকার বিনিময়ে তিনজনে প্রশ্ন কিনতেও চেয়েছিলো। এদের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।  যদি বিশ্ববিদ্যালয়েরও কেউ থাকে তবে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

আটককৃতরা হলেন-ববির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মুয়ীদুর রহমান বাকী (২২)। তিনি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের বিবির হাওলা গ্রামের গাজী হাফিজুর রহমানের ছেলে এবং বরিশালের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আর্শেদ আলী কন্ট্রাক্টর গলির নাহার ম্যানসনের ভাড়াটিয়া।

ঢাবির ভূ-তত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মারুফ হোসাইন মারুফ (২২)। তিনি যশোর জেলার বাঘারপাড়া থানাধীন নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নের বলরামপুর ইউনিয়নের মুরাদ মোল্লার ছেলে ও অমর একুশে হলের শহীদ বরকত ভবনের ৪০১ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা।

ঢাবির মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আলমগীর হোসেন শাহিন (২৪)। তিনি পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার লেবুখালি ইউনিয়নের কার্তিকপাশা গ্রামের মৃত আব্দুর কাদের হাওলাদারের ছেলে ও অমর একুশে হলের শহীদ বরকত ভবনের ৩০১ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা।

ঢাবির গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মাহামুদুল হাসান আবিদ (২৩)। তিনি পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌরসভার কলেজপাড়ার জাহিদুল ইসলামের ছেলে ও অমর একুশে হলের শহীদ বরকত ভবনের ৩০২ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা।

গলাচিপা ডিগ্রি কলেজের মানবিক শাখার তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সাব্বির আহম্মেদ প্রিতম (২৩)। তিনি গলাচিপা সদর উপজেলার পানপট্টি এলাকার জাফর আহম্মেদের ছেলে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে মোহাম্মাদপুর ডিগ্রি কলেজের বিবিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাকিব আকন (২১)। তিনি দুমকী সদর উপজেলার লেবুখালীর আবুয়াল হোসেনের ছেলে।

এদিকে আটককৃত আলমগীর হোসেন শাহিন নিজেকে ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে দাবি করলেও পুলিশ এর সত্যতা এখনো পায়নি।