বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ করে রেকর্ডসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। গত সোম ও মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে ৮২টি পদোন্নতিপত্র ইস্যু করা হয়।
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে একবারে এতসংখ্যক পদোন্নতি নিয়ে। কানাঘুঁষা চলছে প্রশাসনের বিরাগভাজন হওয়ায় একাধিক ব্যক্তির পদোন্নতি আটকে দেয়া নিয়েও। তবে যথাযথ প্রক্রিয়া ও নীতিমালা মেনেই যোগ্য ব্যক্তিদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে জানা গেছে, মোট ৮২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এ দফায় পদোন্নতি দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ১৫ জন কর্মকর্তা এবং ৪০ জন কর্মচারী। এছাড়া আলাদাভাবে ২৭ জন পদোন্নতি পেয়ে কর্মচারী থেকে একলাফে কর্মকর্তা হয়েছেন।
গত জানুয়ারি মাসে পদোন্নতির জন্য সিলেকশন বোর্ডের ভাইভার (মৌখিক পরীক্ষার) সম্মুখীন হতে হয় সবাইকে। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় পদোন্নতি অনুমোদন দেয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, এই পদোন্নতির আগে যোগ্য ব্যক্তিদের তালিকা করে তাদের ভাইভা নেওয়ার জন্য বোর্ড গঠন করে প্রশাসন৷ কিন্তু ভাইভা দেয়া একাধিক ব্যক্তিকে অদৃশ্য কারণে পদোন্নতি দেয়া হয়নি। তারা দীর্ঘদিন পদোন্নতি বঞ্চিত ও নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্য ছিল।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাহাউদ্দীন গোলাপ জানান, একসঙ্গে এতসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদোন্নতি আগে কখনো হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। প্রশাসনের এমন পদক্ষেপকে তিনি সাধুবাদ জানান। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আপগ্রেডেশন (পদোন্নতি) নীতিমালার কিছু ধারা পরিবর্তনের দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে তাদের। এ বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব চাকরিজীবীদের সুবিধা হবে বলে মনে করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, আমার যোগদানের আগে থেকেই এখানকার শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ অনেকের পদোন্নতি আটকে ছিল। আমি প্রথম থেকেই এ অচলায়তন দূর করতে চেয়েছি। মাঝখানে করোনা পরিস্থিতি থাকায় কিছুটা দেরি হলেও শতভাগ নীতিমালা মেনে ধারাবাহিকভাবে যোগ্যদের পদোন্নতি কার্যক্রম চলমান রেখেছি।
তবে কয়েকজনের পদোন্নতি বঞ্চিত থাকার প্রসঙ্গ তোলা হলে ভিসি বলেন, শুধুমাত্র আপগ্রেডেশন নীতিমালায় আটকে যাওয়ার কারণে কয়েকজন ভাইভা দিয়েও এবার পদোন্নতি পাননি। যোগ্য কেউ যেন পদোন্নতি বঞ্চিত না থাকেন সে ব্যাপারে ভাবছি আমরা। সবাই যদি ঐক্যবদ্ধভাবে আমাকে সহায়তা করেন তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সংকট দূর করা সহজ হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর (২০২০) করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার মধ্যেই প্রায় পঞ্চাশজন শিক্ষককে পদোন্নতি দেয়া হয়। এসব শিক্ষকের বেশিরভাগই এর আগের দুই উপাচার্যের মেয়াদকালে নানা কারণে পদোন্নতি বঞ্চিত ছিল। বর্তমান উপাচার্য যোগদানের পর থেকেই দীর্ঘদিন পদোন্নতি বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মকর্তারা দ্রুত পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্নের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।