ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রভাব ফেলার কেলেঙ্কারির কেন্দ্রে থাকা রাজনৈতিক পরামর্শদানকারী প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ এনালিটিকা ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে । প্রতিষ্ঠানটি বিরুদ্ধে, অনৈতিকভাবে রাজনৈতিক গ্রাহকদের হয়ে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে অভিযুক্ত। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
ফেসবুককে উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়, একটি ‘কুইজ অ্যাপ’ ব্যবহার করে প্রায় ৮ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেয়া হয়। ফেসবুক জানিয়েছে, এ বিষয়ে এখনো তদন্ত চালাচ্ছে তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির এক মুখপাত্র ক্যামব্রিজ এনালিটিকার ব্যবসা বন্ধ করা নিয়ে বলেন, এর জন্য আদতে কি ঘটেছে এবং তা যেন আবার না ঘটে তা নিশ্চিত করায় আমাদের সংকল্প ও প্রতিশ্রুতিতে কোন পরিবর্তন আসবেনা। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আমাদের তদন্ত অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, ক্যামব্রিজ এনালিটিকার বিরুদ্ধে কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়ার ও সেসব তথ্য ব্যবহার করে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট গণভোট প্রভাবিত করার অভিযোগ ওঠেছে।
মার্চের চার তারিখ চ্যানেল ৪, ক্যামব্রিজ এনালিটিকার প্রধান নির্বাহী কর্মী আলেক্সান্ডার নিক্স এর একটি ভিডিও প্রচার করে। তাতে উদাহরণ দেয়া হয়, সংস্থাটি কিভাবে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন অনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে নির্বাচন প্রভাবিত করতে পারবে। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি অবশ্য অপরাধ করার কথা অস্বীকার করেছে। প্রতিষ্ঠানটির নাইজেরিয়া, কেনিয়া ও ইতালির মত বিভিন্ন দেশে নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করার ইতিহাস রয়েছে।
বন্ধ করার বিষয়ে ক্যামব্রিজ এনালিটিকার এক মুখপাত্র ক্ল্যায়েরেন্স মিচেল তাদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেন, গত কয়েক মাস ধরে ক্যামব্রিজ এনালিটিকার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অমূলক অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এর ইতিহাস ঠিক করার চেষ্টা করা সত্ত্বেও তাদেরকে এমন কার্যক্রমের জন্য নিন্দার শিকার হয়েছে, যেগুলো অবৈধ-তো নয়ই, বরঞ্চ, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক খাতে অনলাইন বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ক্যামব্রিজ এনালিটিকার কর্মীদের এ বিষয়ে সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাস আছে যে তারা নৈতিক ও আইনীভাবে কাজ করেছে। কিন্তু গণমাধ্যমের হস্তক্ষেপের কারণে প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রায় সকল ভোক্তা ও সরবরাহকারী হারিয়েছে। যার কারণে, এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, এই ব্যবসা অব্যাহত রাখা আর প্রযোজ্য নয়।