কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে রোববার দশ জেলায় নারী-শিশুসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৭ জন। মার্চ থেকে মে ও অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। বজ্রপাতের সময় কী করা উচিত, আর কী উচিত নয়—সে বিষয়েও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
১. পাকা বাড়ির নীচে আশ্রয় নিন। ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু জায়গায় না থাকাই ভালো। এ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো হয় যদি কোনও দালানের নীচে আশ্রয় নিতে পারেন।
২. উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকুন বজ্রপাত হলে উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এ সব জায়গায় যাবেন না বা কাছাকাছি থাকবেন না। ফাঁকা জায়গায় কোনও যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে।
৩. জানালা থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।
৪. ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলুন বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করবেন না। বজ্রপাতের সময় এগুলোর সংস্পর্শ এসে অনেকে আহত হন।
৫. টিভি-ফ্রিজ থেকে সাবধান। বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের আভাস পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখুন।
৬. বজ্রপাতের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করুন। যদি প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টির সম্মুখীন হন তবে গাড়ি কোনও বারান্দা বা পাকা ছাউনির নীচে নিয়ে যান। এ সময় গাড়ির কাঁচে হাত দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
৭. বাজ পড়া অব্যাহত থাকলে সে সময় রাস্তায় বের না হওয়াই মঙ্গল। একে তো বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। উপরন্তু কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়লে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।
৮. খালি পায়ে বা পা খোলা জুতো নয় বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। যদি একান্ত বেরোতেই হয় তবে পা ঢাকা জুতো পড়ে বের হোন। রাবারের গাম্বুট এ ক্ষেত্রে সব থেকে ভালো কাজ করবে।
৯. বজ্রপাতের সময় রাস্তায় চলাচলের সময় আশেপাশে খেয়াল রাখুন। যে দিকে বাজ পড়ার প্রবণতা বেশি সে দিক বর্জন করুন।
এছাড়া বজ্রপাতে কেউ আহত হলে তাকেও বিদ্যুৎস্পর্শে আহতদের মতোই চিকিৎসা করতে হবে। দ্রুত চিকিৎসক ডাকতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে নিতে হবে। একইসঙ্গে আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তবে এ বিষয়ে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ জরুরি; যা সহজেই নেয়া যেতে পারে।