বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দু-তিন দিনের মধ্যে কক্ষপথে পৌঁছাবে

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

  • ১২ মে মহাকাশে পাঠানো হয় বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট।
  • মহাকাশে কক্ষপথ ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। 
  • তিনটি গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

দেশের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই মহাকাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছাবে। স্যাটেলাইটটির তিনটি সোলার প্যানেলও ঠিকভাবে কাজ করছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও স্যাটেলাইট প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ১২ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সফলভাবে মহাকাশে পাঠানো হয় বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। মহাকাশে এই স্যাটেলাইটটির নির্দিষ্ট কক্ষপথ হলো ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের উৎক্ষেপণস্থল থেকে এই কক্ষপথের দূরত্ব ৩৬ হাজার কিলোমিটার।

বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক গতকাল শনিবার  বলেন, ‘আমাদের কাছে যে খবর তাতে ঠিকঠাক মতোই এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে স্যাটেলাইটটির অবস্থান ও পরিস্থিতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।’

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মহাকাশে স্যাটেলাইটটি উড়ে যাওয়ার পর দুটি ধাপে এর উৎক্ষেপণ-প্রক্রিয়া শেষ হবে। এ জন্য মোট সময় লাগবে এক মাস। উৎক্ষেপণের পরপরই স্যাটেলাইটটি ৩৫ হাজার ৭০০ কিলোমিটার অতিক্রম করে। পরবর্তী ৩০০ কিলোমিটার অতিক্রম করতে স্যাটেলাইটটির সময় লাগতে পারে কমপক্ষে ১০ দিন। এই ১০ দিনের মধ্যে ৭ দিন পার করেছে স্যাটেলাইটটি। এই প্রক্রিয়াকে বলে ‘লঞ্চ অ্যান্ড আরলি অরবিট ফেজ’। এরপর স্যাটেলাইটটির নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপন হতে আরও ২০ দিন লাগবে।

কক্ষপথে চূড়ান্ত অবস্থান নেওয়ার পর পৃথিবী থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় পৃথিবীর সমান গতিতেই ঘুরবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। পৃথিবীর মতো ২৪ ঘণ্টায় একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে এই স্যাটেলাইট। ফলে পৃথিবী থেকে স্যাটেলাইটটিকে স্থির মনে হবে। তবে এই স্যাটেলাইট থেকে পুরোদমে সেবা পেতে তিন মাসের মতো সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থ্যালেস এলেনিয়া স্পেস যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়ার তিনটি গ্রাউন্ড স্টেশন (ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা) থেকে এটির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি অনুযায়ী, থ্যালেস প্রথম তিন বছর বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে স্যাটেলাইটটি পর্যবেক্ষণের কাজ করবে। এই সময়ে সক্ষমতা তৈরি হয়ে গেলে এর দেখাশোনার দায়িত্ব বাংলাদেশের ওপরই ছেড়ে দেবে ফরাসি কোম্পানিটি। বাংলাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের জন্য দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে জয়দেবপুরের গ্রাউন্ড স্টেশনটিই স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের মূল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। আর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হবে রাঙামাটির বেতবুনিয়া গ্রাউন্ড স্টেশন। গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশনে ইতিমধ্যে স্যাটেলাইট থেকে আসা সংকেত পাওয়া যাচ্ছে।