আলোর বন্যায় ভেসে গেল ঢাকার আকাশ। হাতিরঝিলের জল ছুঁয়ে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সবুজ বনানী পেরিয়ে ফানুসের আত্মোন্মোচনে বর্ণিল রাতের ঢাকা। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর সফল উৎক্ষেপণে আতশবাজি আর শত শত মানুষের আনন্দ-উল্লাসে অন্য রকম এক সন্ধ্যা। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণে উচ্ছ্বসিত গর্বিত জাতির সঙ্গে বাহারি আলোর ছটায় গতকাল মঙ্গলবার মেতে উঠেছিল সারাদেশ। ঢাকার বাইরে প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলা শহরেও একইভাবে আয়োজন করা হয় আতশবাজির আনন্দ আয়োজন।
ঢাকায় মূল আয়োজন ছিল হাতিরঝিলের মুক্তমঞ্চে। এখানে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ভারপ্রাপ্ত ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব সাইফুল ইসলাম। অন্যদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হকসহ সংস্থার কর্মকর্তারা।
হাতিরঝিলের আয়োজনে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুই ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রামের বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে দেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের স্বপ্নের বীজ বপন করেছিলেন। আর সেই স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঠিক দিকনির্দেশনায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ হয়।
বক্তব্যের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দিনাত জাহান মুন্নী, সুজন আরিফসহ একাধিক শিল্পী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এরপরই শুরু হয় আতশবাজির উৎসব। উপস্থিত শত শত মানুষ বর্ণিল আলোর ছটায় উৎসবে মেতে ওঠেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আয়োজন :রাত সাড়ে ৮টা। উৎসবমুখর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। উদ্যানের গ্লাস টাওয়ারের পাশে বসানো কয়েকটি মঞ্চ থেকে একের পর এক অগ্নিগোলক ছুটে যাচ্ছে আকাশপানে। সশব্দে ফুটে ছড়িয়ে দিচ্ছে আলোক রোশনাই। বর্ণিল আলোতে ঝলমলিয়ে উঠছে আঁধারি আকাশ। চারপাশ ছাপিয়ে কানে আসছে জনতার উল্লাসধ্বনি। দেশের প্রথম স্যাটেলাইট (কৃত্রিম উপগ্রহ) বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণের সাফল্য উদযাপনে এ আনন্দ উৎসবের আয়োজন করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টায়। এ সময় বক্তব্য দেন বিটিআরসির সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ ও ভাইস চেয়ারম্যান জহুরুল হক।
বক্তৃতার পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাত সাড়ে ৮টায় আতশবাজি শুরু হয়। চলে ১০ মিনিট। আতশবাজি উপভোগ করতে এ সময় উদ্যানে হাজারো দর্শকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। লালবাগ থেকে আসা মোহসিন আলম বলেন, দেশের সাফল্যকে আনন্দ-উল্লাসের সঙ্গে উদযাপন করতে বন্ধুরা এখানে একত্র হয়েছেন। তিনি বলেন, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের এ সফলতায় বাংলাদেশি হিসেবে তিনি গর্বিত।
রাজশাহীতে উৎসব :রাজশাহী ব্যুরো জানায়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণ উপলক্ষে আতশবাজি উৎসব করেছে রাজশাহীবাসী। মঙ্গলবার রাত ৮টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে রাজশাহী কলেজ মাঠে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসব চলে ৮টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। এতে আশপাশ এলাকা আলোকিত হয়ে ওঠে।