আসাদ মিঠু: আপনার অনলাইনে অবস্থান নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ যেকোন জরুরী অবস্থা হতে বেঁচে যেতে পারেন। বর্তমান যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক একটি গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম। আপনার ফেসবুকে পোস্ট করা কোন তথ্যের জন্য দ্বায়ী আপনি কারন পোস্ট করা এ্যাকাউন্টটি যদি হয় আপনার। প্রযুক্তির এই সুত্রকে কাজে লাগিয়ে আপনাকে বিপদে ফেলানোর জন্য তৃতীয় কোন ব্যাক্তির একটাই লক্ষ্য থাকতে পারে আপনার ফেসবুক একাউন্ট। ফেসবুকের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে ফেসবুক যে নিরাপত্তা দিচ্ছে তা খুবই শক্তিশালী। কিন্তু একজন ব্যবহারকারী যদি সে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সর্বোচ্চ ব্যবহার না করেন তবে ব্যবহারকারী তৃতীয় কোন ব্যক্তি দ্বারা আক্রমনের শিকার হতে পারেন। নিজের তথ্য সুরক্ষিত রাখা এতো সহজ না। অনলাইনে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের মাধ্যমে একজন অপরের দ্বারা ট্রাকিং, হয়রানি প্রতিনিয় হচ্ছে। “ডু নট ট্রাক” নামক একটি প্রতিষ্ঠান যারা প্রকাশ করছে অনলাইনে আপনি কাদের দ্বারা ট্রাকিং হতে পারেন।
বিবিসির সুত্রমতে, ২০১৮ সালের নভেম্বরে একদল হ্যাকার ৮১০০০ ব্যাক্তিগত ফেসবুক প্রফাইলের ম্যাসেন্জারের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না করার ফলে তৃতীয় কোন ব্যক্তি হাতিয়ে নিচ্ছে কোন ব্যাক্তিগত ফেসবুকের তথ্য। ভবিষ্যতে তাই অনলাইনে নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা রক্ষা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের অংশ হিসেবে দাড়িয়েছে। শুধু তাই নয় সামাজিক কোন উশৃঙ্খলা তৈরীতে এখন কোন ব্যাক্তিগত ফেসবুক এ্যাকাউন্ট চুরি করে এ্যাক্সেস নেয়াটার ব্যাপারটাও লক্ষ্য করা যায়।
মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা পাওয়া গেছে যে বিগত বছরগুলিতে ৯.২% তাদের সামাজিক মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে গোপনীয়তা সম্পর্কিত সেটিংসগুলিকে ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও, জরিপ করা প্রায় এক চতুর্থাংশ লোক ২৩% “গোপনীয়তার উদ্বেগের কারণে একটি সামাজিক মিডিয়া প্রোফাইল মুছে ফেলেছেন বা নিষ্ক্রিয় করেছেন।” ২০০৮ পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলে তা প্রকাশ পেয়েছে। যারা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা বা নিষ্ক্রিয় করেছেন তাদের মধ্যে, চতুর্থাংশের বেশি তারা তাদের টুইটার ২৮.৫% এবং ইনস্টাগ্রাম ৩০.৫% অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছেন বা নিষ্ক্রিয় করেছেন বলে জানিয়েছে। ৪৩.১% ব্যক্তিগত তথ্য বা পোস্টগুলি সরিয়েছে যা তারা চায় না যে নেটওয়ার্ক বা অন্যরা দেখতে চায়। ৩৫.০% তাদের প্রোফাইল সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত করেছে। ৩৪.৮% তাদের পোস্টে অবস্থানের ট্যাগ যুক্ত করা বন্ধ করে দিয়েছে। ৩৮.২% তথ্যের গোপনীয়তা পরিবর্তিত করেছে যা শুধুমাত্র তাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করেছেন।
ফেসবুকে আপনার নিরাপদ ব্রাউজিং নিশ্চিত করতে সিটিংস অপশনে “সিকিউরিটি এন্ড লগিন” অপশনে গিয়ে একটি মজবুত পাসওয়ার্ড নিশ্চিত করুন এবং “টু ফ্যাক্টর এ্যাথেন্টিকেশন” চালু করুন। এ্যাথেন্টিকেশন এ্যাপ অনেক নিরাপদ। যা শুধুমাত্র আপনার মোবাইলে কোডিং সিস্টেম চালু করে দিবে। এবং প্রতিবার আপনার এ্যাকাউন্টে লগিন করার সময় মোবাইল থেকে নতুন উৎপন্ন কোডটি দিতে হবে। এ অপশন চালু থাকলে এ্যাকাউন্ট হ্যাক হবার সম্ভাবনা খুব কম। আর তারপরে রিকভারি কোডটি সজত্নে আপনার কাছে রেখে দিন। যাতে মোবাইল সাথে না থাকলেও সাময়িক সময়ের জন্য আপনি আপনার এ্যাকাউন্টে এ্যাক্সেস নিতে পারেন।
ফেসবুকে গোপনীয়তা রক্ষা করা এতো সহজ নয়। কিন্তু ফেসবুকে কিছু অপশন ব্যবহার করে আপনার তথ্য কিংবা পোস্ট অন্যের কাছ থেকে গোপন রাখতে পারেন। সেজন্য ফেসবুক সিটিংস এ গিয়ে “প্রাইভেসি” অপশনগুলো বেছে নিতে হবে। সেখান থেকে আপনার ফেসবুকের সকল তথ্য কিভাবে গোপন করবেন তা নির্বাচিত করতে হবে।