#

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কখন কী ভাইরাল হবে, তা আগে থেকে বোঝা মুশকিল। এই যেমন কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে বৃদ্ধ চেহারার মানুষজন। ভবিষ্যতে নিজের বেশি বয়সের ছবি কেমন হবে, তা পোস্ট করছেন অনেকেই। ‘ফেসঅ্যাপ’ নামে একটি অ্যাপ দিয়ে এ ধরনের ছবি তৈরি করে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করছেন  ব্যবহারকারীরা।

মজার ব্যাপার হলো, ‘ফেসঅ্যাপ’ কিন্তু নয়া কোনো অ্যাপ নয়। বছর দুয়েক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় হয়েছিল অ্যাপ্লিকেশনটি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যবহার করে মানুষের চেহারায় নিখুঁতভাবে বয়সের ছাপ এনে দিতে পারে কিংবা বয়স কমাতে পারে এই মোবাইল অ্যাপ। স্মার্টফোনের অ্যান্ড্রয়েড ও অ্যাপলের আইওএস দুই প্ল্যাটফর্মেই ব্যবহার করা যাচ্ছে এ অ্যাপ। কারো ছবির বয়স কমানো বা বাড়ানো ছাড়াও অ্যাপটি ব্যবহার করে চুল ও দাড়ির ধরনও পাল্টে দেওয়া সম্ভব।

২০১৭ সালে যখন ‘ফেসঅ্যাপ’ প্রথম স্মার্টফোনে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা শুরু হয়, তখনই এই অ্যাপ নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। দুবছর বাদে অ্যাপটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় আবারও এ নিয়ে কথা উঠেছে।

সাধারণত কোনো অ্যাপ্লিকেশন স্মার্টফোনে ইন্সটল করার সময় অ্যাপটি ব্যবহারের শর্তাবলি পড়েন না বেশিরভাগ ব্যবহারকারীই। এই যেমন ‘ফেসঅ্যাপ’-এর কথাই ধরুন। আপনি যে ছবিটিতে বয়স বাড়াতে বা কমাতে চাচ্ছেন, সে ছবিটি ব্যবহারকারীর স্মার্টফোন থেকে নিজেদের সার্ভারে আপলোড করে ছবি এডিট করার কাজটি করে ‘ফেসঅ্যাপ’। আর সেখানেই রয়েছে সন্দেহের অবকাশ।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টুইটারে এলিজাবেথ পটস উইন্সটেইন নামের এক আইনজীবী নারী ‘ফেসঅ্যাপ’ ব্যবহারের শর্তাবলি জানিয়ে একটি পোস্ট করেছেন। ওই পোস্টে এলিজাবেথ যা লিখেছেন, তা পড়লে আপনি চমকে উঠবেন।

এলিজাবেথ টুইটে লিখেছেন, ‘আপনি যদি ফেসঅ্যাপ ব্যবহার করেন, মনে রাখবেন তাদেরকে আপনি নিজের নাম, আপনার ফেসবুকে কী নাম ব্যবহার করেন কিংবা আপনি কী পছন্দ করেন—এসব তথ্য বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়ে দিচ্ছেন।’

Elizabeth Potts Weinstein@ElizabethPW

If you use you are giving them a license to use your photos, your name, your username, and your likeness for any purpose including commercial purposes (like on a billboard or internet ad) — see their Terms: https://twitter.com/scottbudman/status/1151283963383578624 

View image on Twitter

scott budman

@scottbudman

#Warning: Every few years, the #FaceApp comes around.

It’s fun.
It draws a lot of people in.
But, it also captures your face along with some of your private data.
It doesn’t tell us what it does with that data.

Be careful.

18.4K people are talking about this

তাই নিজের ব্যক্তিগত তথ্য ‘ফেসঅ্যাপ’-কে না জানতে দিতে চাইলে অ্যাপটি থেকে দূরে থাকাই উত্তম। অন্তর্জাল দুনিয়ায় গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য অত্যন্ত মূল্যবান। আর সে মূল্যবান তথ্য গ্রাহকের অজান্তে হাতিয়ে নিয়ে বিপুল অর্থ কামিয়ে নিচ্ছে ‘ফেসঅ্যাপ’-এর মতো অ্যাপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

অ্যাপ ব্যবহার করে আট কোটি ৭০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেয় লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলেকজান্ডার কোগানের তৈরি অ্যাপ্লিকেশন ‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল ফেসবুক। এতে ব্যবহারকারীদের তথ্য জোগাড় করার সুযোগ পান ওই অধ্যাপক। তিনি পরবর্তী সময়ে ব্যবহারকারীদের ওই তথ্যাবলি কোগান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে সরবরাহ করেন। ওই তথ্য ব্যবহার করে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমেরিকান নাগরিকদের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব রেখেছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।

‘ফেসঅ্যাপ’ ছাড়াও এর আগে স্ন্যাপচ্যাট অ্যাপ ব্যবহার করেও চেহারার বয়স কমিয়েছে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন