ফারিয়া-অপুর বিয়ে কেন ভাঙল?

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

বিয়ের মাত্র এক বছর নয় মাসের মাথায় ভেঙে গেল শবনম ফারিয়া-অপুর সংসার। এ নিয়ে ফেসবুকে লম্বা একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন শবনম ফারিয়া। এছাড়া গণমাধ্যমেও কথা বলেছেন তিনি।

বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ জানতে চাইলে শবনম ফারিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, উল্লেখযোগ্য কোনও কারণ নেই এই বিচ্ছেদের পেছনে। ফলে একে অপরের প্রতি কোনও অভিযোগও নেই। দুজনেই চেয়েছেন নিজেদের মতো ভালো থাকতে।

তিনি বলেন, ‘‘আমার মা সব সময় একটা কথা বলে, ‘আল্লাহর হুকুম ছাড়া একটা গাছের পাতাও নড়ে না, আমরা শুধু চেষ্টা করতে পারি!’ ঠিক সেভাবেই আমি আর অপু অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করেছি একসাথে থাকতে! কিন্তু বিষয়টা একটা পর্যায়ে খুব কঠিন হয়ে যায়। আমরা এ বছরের শুরু থেকেই সিদ্ধান্তে আসি আর একসাথে থেকে কষ্টে থাকতে চাই না। তাই বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে আবারও ৫ বছরের পুরনো বন্ধুত্বে ফিরে গিয়েছি।’’

এদিকে ফেসবুকের লম্বা স্ট্যাটাসে ফারিয়া বলেন, ‘‘মানুষের জীবন নদীর মতো। কখনও জোয়ার, কখনও ভাটা। কখনও বৃষ্টিতে পানি বেড়ে যায়, শীতকালে পানি শুকিয়ে যায়। আমাদের জীবনেও এমনটা হয়!

আমাদের জীবনে কিছু মানুষ আসে; কেউ কেউ স্থায়ী হয়, কেউ কেউ কিছু কারণে স্থায়িত্ব ধরে রাখতে পারে না!

আমার মা সব সময় একটা কথা বলে, “আল্লাহর হুকুম ছাড়া একটা গাছের পাতাও নড়ে না, আমরা শুধু চেষ্টা করতে পারি!“
ঠিক সেভাবেই আমি আর অপু অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করেছি একসাথে থাকতে!

কিন্তু বিষয়টা একটা পর্যায়ে খুব কঠিন হয়ে যায়!
“মানুষ কি বলবে” ভেবে নিজেদের উপর একটু বেশিই টর্চার করে ফেলছিলাম আমরা!

“জীবনটা অনেক ছোট, এতো কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকার কি দরকার”? এইটা ভেবে আমরা এ বছরের শুরু থেকেই সিদ্ধান্তে আসি আমরা আর একসাথে থেকে কষ্টে থাকতে চাই না!

তাও বছর খানেক সময় নিয়েছি পরস্পরকে বুঝতে! ফাইনালি “আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন্যেই করেন” ভেবে আমরা আমাদের প্রায় আড়াই বছরের বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে আবারও ৫ বছরের পুরানো বন্ধুত্বে ফিরে গিয়েছি।

বিবাহে বিচ্ছেদ হয়, কিন্তু ভালবাসার বিচ্ছেদ নেই! বন্ধুত্বের বিচ্ছেদ নেই!

যতদিন বেঁচে আছি আমাদের ভালবাসা ও বন্ধুত্ব থাকবে!
শুধুমাত্র বৈবাহিক বন্ধন থেকে আমাদের সম্পর্কের ইতি টেনে নিলাম! এ ঘটনা আমাদের জীবনের গতি হয়তো রোধ করবে, ছন্দপতন করবে কিন্তু জীবন তো থেমে থাকবে না!

অপুর জন্যে আমার অনেক অনেক দোয়া, ভালবাসা আর শুভ কামনা। আমরা যে সুখের জন্যে আলাদা হলাম আমরা যেন সে সুখ খুঁজে পাই। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

দয়া করে “মিডিয়ার বিয়ে টেকে না” ধরণের কথা বলে আমাদের জন্যে আমাদের সহকর্মীদের ছোট করবেন না! আমরা সম্পূর্ণ “পারিবারিক কারণে” , পারিবারিক ভাবে, পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ের মতো ইনষ্টিটিউশন থেকে বের হয়ে এসেছি!

আমাদের কখনও ভালবাসা কিংবা বিশ্বাসের অভাব ছিল না, হবেও না!

আর আমার প্রিয় সাংবাদিক ভাই/বোনদের উদ্দেশ্যে একটাই অনুরোধ, দয়া করে একটু মানবিকতার সাথে বিষয়টা দেখবেন! প্লিজ!

দুজন মানুষের বিবাহ্ বিচ্ছেদ মানে, দুইটা পরিবারের বিচ্ছেদ, অনেক স্মৃতির বিচ্ছেদ! অনেক ভালো সময়ের সাথে বিচ্ছেদ এইটা কারও জন্য সুখকর অনুভূতি না! দয়া করে মুখরোচক অদ্ভুত সংবাদ প্রকাশ করে আমাদের আর বিব্রত করবেন না! আমরা একে অন্যের উপর সম্পূর্ণ সম্মান বজায় রাখতে চাই!
ধন্যবাদ!’’

জানা যায়, শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) বিচ্ছেদ পত্রে সই করেন শবনম ফারিয়া ও হারুন অর রশীদ অপু।

প্রসঙ্গত, গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ও বেসরকারি চাকরিজীবী হারুন অর রশীদ অপু। এদিন নৌকায় ভেসে ভেসে পরীর বেশে বিয়ের আসরে হাজির হন নববধূ শবনম ফারিয়া! অন্যদিকে একই সময়ে লেকের পাড় ধরে ঘোড়ার গাড়িতে চেপে আসেন বর হারুন অর রশীদ অপু। এমন নান্দনিক বিয়ের আয়োজন এর আগে কোনও শিল্পীকে ঘিরে হয়নি। মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকার গভীরে, নয়নাভিরাম ‘জল-জোছনা’য় উন্মুক্ত আকাশের নিচে আয়োজিত হয় এটি।

২০১৫ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে ফারিয়া-অপুর পরিচয় হয়। দুজনের ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়। তিন বছর পর বন্ধুত্বের সীমানা পেরিয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আংটি বদল হয় তাদের।