‘ফাঁস হওয়া’ প্রশ্ন কিনতে ছদ্মবেশে ওত পেতে আছে র্যাব। সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে নজরদারি ছাড়াও সারাদেশে গোয়েন্দা নজরদারি চালানো হচ্ছে। তৎপর রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থাও। র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ গতকাল সোমবার এ তথ্য জানিয়ে ওই ফাঁদে কাউকে পা না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো জঘন্য অপরাধ রোধে র্যাব সতর্ক আছে। যদি কোনো শিক্ষার্থীর কাছে পরীক্ষার আগে ফাঁস হওয়ার নামে সত্য বা মিথ্যা প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়, তাহলে এবার ওই শিক্ষার্থীকেও আইনের আওতায় নেওয়া হবে। এতে ওই শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে গেলেও দায়দায়িত্ব সংশ্নিষ্ট শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবকদের নিতে হবে। র্যাব সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
গতকাল এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রশ্ন ফাঁসের নামে প্রতারক চক্রের সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে র্যাব ডিজি বলেন, তাদের কাছে কোনো প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়নি। তারা শুধু প্রশ্নপত্র দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।
বেনজীর আহমেদ বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টাকারীরাও সন্ত্রাসী। এসব সন্ত্রাসীকে জঙ্গিদের মতো করেই নিশ্চিহ্ন করা হবে। এ জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবার সহযোগিতা দরকার। দেশবাসীকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই পাপ নির্মূল করা হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে কেউ এমন জঘন্য অপরাধ করার সুযোগ পাবে না। র্যাব এই চক্রকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রতারণার ফাঁদে পা না দিতে তিনি সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এ জন্য সারাদেশে শিক্ষক, পরীক্ষার্থী সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ প্রশ্ন ফাঁসের তথ্য পেলে র্যাবকে জানাতে অনুরোধ করেন তিনি।
এর আগে এসএসসি পরীক্ষায় কোচিং সেন্টারগুলো প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে র্যাব ডিজি বলেন, পুরনো ঘটনাগুলোর তদন্ত চলছে। কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর দুই দিন আগে থেকেই প্রশ্ন ফাঁস করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গত শনিবার রাজধানীর তেজগাঁও লিংক রোড এলাকা থেকে মিজানুর রহমান মিলন ও রাফসান চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। গত রোববার বনানী এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলাম, পুরান ঢাকার বংশাল থেকে তানজীল আহমেদ, টঙ্গী থেকে সানি রহমান, বগুড়ার শাজাহানপুর থেকে সামিউল সালাম এবং গতকাল দিনাজপুর থেকে সিয়াম শাহরিয়ার নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই বয়সে তরুণ। গ্রেফতার সাতজনের মধ্যে ছাত্র থেকে শুরু করে নানা পেশার লোক রয়েছে।