কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ছয়টি জেলায় এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার পর এবার জেএসসিতেও ফলাফলে ভরাডুবি হয়েছে। এ বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষায় এবার পাসের হার ৬২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। গত চার বছরের মধ্যে এটাই সর্বনিম্ন পাসের হার। শনিবার দুপুর ১২টায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এ বছর বোর্ডে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে ছেলে ১ লাখ ৮ হাজার ৫০৪ জন এবং মেয়ে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৪৯ জন। পাস করেছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৪৫৬ জন, যার মধ্যে ৭০ হাজার ৩৭৪ জন ছেলে ও ৯৪ হাজার ৮২ জন মেয়ে।
এবার পাসের হারের দিক থেকে ছেলেরা এগিয়ে রয়েছে। ৬৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ ছেলে ও ৬১ দশমিক ৩৯ শতাংশ মেয়ে পাস করেছে।
এ বছর জিপিএ ৫ অনেক কমেছে। গত বছর জিপিএ ৫ পেয়েছিল ১৯ হাজার ১৮৬ জন। এবার জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮ হাজার ৮৭৫ জন।
২০১৬ সালে পাসের হার ছিল ৮৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ, ২০১৫ সালে পাসের হার ছিল ৯২ দশমিক ৫১ শতাংশ, ২০১৪ সালে পাসের হার ছিল ৯৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ২০১৩ সালে পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহাদুর হোসেন শনিবার কুমিল্লার বার্তা ডটকমকে এসব তথ্য জানান।
বাহাদুর হোসেন জানান, ইংরেজি ও গণিতে ফলাফল খারাপ করায় কুমিল্লা বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। শহর পর্যায়ের স্কুলগুলোর ফলাফল ভালো হলেও উপজেলা পর্যায়ে স্কুলগুলো বেশি খারাপ করেছে।
“ইংরেজিতে ফেল করেছে ৭৬ হাজার ৬৮১ জন, অর্থাৎ ৭০ দশমিক ৭০ শতাংশ। গণিতে ফেল করেছে ৪৫ হাজার ৯১৫ জন, অর্থাৎ ৮২ দশমিক ৪৬ শতাংশ।”
উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইংরেজি ও গণিতে শিক্ষক স্বল্পতার কথা উল্রেখ করেন এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, কুমিল্লার ৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতভাগ পাশ করেছে। অপরদিকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার জগতপুর হাই স্কুলে কেউ পাশ করেনি।
এর আগে গত ১ নভেম্বর কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাবোর্ডে অনুষ্ঠিত হয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা। সূত্র জানায়, এ বছর কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড থেকে ২,৬১,৭৫৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। বোর্ডের আওতাভুক্ত ছয় জেলার মোট ২৯৪টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
নোয়াখালী জেলার ৪৭টি কেন্দ্রে ৩১৪টি স্কুল থেকে ৪৮,১৬৮জন, ফেনীর ২৬টি কেন্দ্রে ১৯৫ টি স্কুলের ২৩,৭৯৮জন, লক্ষ্মীপুরের ২৩ টি কেন্দ্রে ১৮৯টি স্কুলের ২৩,৩৪৭জন, চাঁদপুরের ৪৯টি কেন্দ্রে ২৯৭টি স্কুলের ৩৯,০৮৫জন, কুমিল্লার ১০৯টি কেন্দ্রে ৬১৮ স্কুলের ৮৯,৬৭৪জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৪৪ টি কেন্দ্রে ৪১,৯২৯জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
এদিকে শনিবার বেলা পৌনে ১১টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এ ফলাফল তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের পর ফলাফলের বিস্তারিত জানান।
পরীক্ষার ফলাফল www.dpe.gov.bd এবং http://dperesults.teletalk.com.bd থেকে পাওয়া যাবে।
এছাড়াও যেকোনো মোবাইল থেকে DPE লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষার্থীর আইডি লিখে স্পেস দিয়ে বর্ষ লিখে ফল পাওয়া যাবে। আর ইবতেদায়ির ফলাফলের জন্য EBT স্পেস শিক্ষার্থীর আইডি নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বর্ষ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস করলে ফল আসবে।