বিভিন্ন ফল-ফুল, গাছ-পালার বাগান। দুপাশে গুল্ম জাতীয় গাছ রোপণের মাধ্যমে হাঁটার জন্য মনোমুগ্ধকর পথ করা হয়েছে। মাঝ পুকুরে বসানো হয়েছে পানির ফোয়ারা, পুকুরে ভেসে বেড়ানোর স্পিডবোট। পুকুরপাড় ঘেঁষে বসানো হয়েছে ছোট ছোট বেঞ্চ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে স্থাপন করা হয়েছে রঙিন টিনের ছোট ছোট গোলাকৃতি ঘর।
সন্ধ্যার পর জ্বলে ওঠে লাল-নীল, হলুদ-সবুজ বাতি। উদ্যানের খোলা জায়গায় কপি হাউস, টি হাউস, চটপটি-ফুচকা ও বিভিন্ন ধরনের খাবারের দোকান। শিশুদের খেলাধুলা ও আনন্দ-বিনোদনের জন্য দোলনা, ঘূর্ণায়মান চর্কা, বোটসহ আরও রয়েছে নানা উপকরণ। চোখ জুড়ানো এ জায়গাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মুজিব শতবর্ষ পার্ক’।
মুজিব শতবর্ষ পার্ক নির্মাণে ভূমিকা রয়েছে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা-জেলার কর্মকর্তাদের। সবার সমন্বয়ে সেজে উঠছে পার্কটি। দিন যাচ্ছে আর রূপ ছড়াচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে মানুষের ভিড়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে মাত্র কিলো চারেক দূরে এর অবস্থান। চন্দনা-বারাশিয়া নদীর তীর ঘেঁষা বন্দর স্লুইসগেট সংলগ্ন চরবাঁশপুর গ্রামের একপাশে গড়ে উঠেছে এই পার্ক। দখল হয়ে থাকা ২৫ থেকে ৩০ একরের সরকারি এ জায়গা উদ্ধারের পর সেখানে পরিকল্পিত পার্ক নির্মাণ করা হয়। উপজেলার একমাত্র বড় একটি বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দুতে রূপ নিয়েছে পার্কটি।
পার্কে ঘুরতে আসা শারমিন আক্তার লাকি বলেন, পার্কের পাশেই আমাদের চরবাঁশপুর গ্রাম। এখানে আমার ছেলে আত্মীয় স্বজনরা মিলে ঘুরতে এসেছি। ভালোই লাগছে। বাড়ির পাশে পার্ক। এতো অল্প সময়ে ভারি সুন্দর হয়েছে।
মধুখালী উপজেলা যুবলীগ নেতা মির্জা প্রিন্স, মো. বাবুল হোসেন, মমিন ইসলাম, নান্নুসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, বিনোদনের ভালো জায়গা ভালো পরিবেশ হয়েছে পার্কটিতে। অবসরে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে গিয়ে মন ভালো হয়ে যায়। দীর্ঘদিন এমন একটি পরিবেশ উপহার দেওয়ায় জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসককে অভিনন্দন জানাই।
মধুখালীর পৌরসভার বাসিন্দা, নারী নেত্রী স্বপ্না আমিন, শুক্লা রাণী ভৌমিক, শিক্ষক রাধা রানী, মৌসুমি আক্তার, মেকচামীর বামুন্দী গ্রামের শিলা রানী রায় বলেন, মধুখালীতে দীর্ঘদিনেও বিনোদনের ভালো জায়গা ছিল না। পার্কটি অল্প দিনে বেশ সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড়। তবে এখন পর্যন্ত ভালো পরিবেশ বজায় রয়েছে। এমন সুস্থ পরিবেশ যেন বজায় থাকে এটাই কামনা কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে।
এ বিষয়ে মধুখালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি এরই মধ্যে পরিবার নিয়ে পার্কটি ঘুরেছি। বেশ ভালো হয়েছে। এখানে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখাতে সর্বদা চেষ্টা করা হবে।
মধুখালী পৌরসভার মেয়র খন্দকার মোরশেদ রহমান লিমন বলেন, যদিও আমার পৌরসভার বাইরে। তবে বেশি দূরে নয়। ইদানীং বিকেল হলেই পার্কটিতে বিনোদন ও ভ্রমণ পিপাসুদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা যায়। আমার জায়গা থেকে এ পার্ক নির্মাণে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। আমার পৌরবাসীর জন্যও এমন ধরনের একটি পার্ক-বিনোদনের ব্যবস্থার জন্য চেষ্টা ও সচেষ্ট রয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, পার্কটি বাস্তবায়নের কারণে অত্র অঞ্চলে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে মানুষের মধ্যে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সবসময় ভালো কাজের সঙ্গে থাকে। অত্র অঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে, মানুষের আনন্দ বিনোদনের জন্য পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর নামকরণ করা হয়েছে ‘মুজিব শতবর্ষ পার্ক’। পার্কটি ব্যাবহার উপযোগী রাখতে সবার ভূমিকা রাখতে হবে। এছাড়া এখানে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে আনন্দ বিনোদনের পরিবেশের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাই।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com