প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য নৈতিকভাবে অযোগ্য ট্রাম্প: কোমি

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ‘নৈতিকভাবে অযোগ্য’। তিনি নারীদের শুধুই ‘মাংসের টুকরো’ মনে করেন। অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) পদচ্যুত প্রধান জেমস কোমির।

গতকাল রোববার গণমাধ্যম এবিসি নিউজের সাক্ষাৎকারভিত্তিক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘২০/২০’-তে অতিথি হয়ে আসেন সাবেক এফবিআই প্রধান। গত বছরের মে মাসে এফবিআইর পরিচালক পদ থেকে জেমস কোমিকে বরখাস্ত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এরপরে এটিই কোমির অন্যতম বড় টেলিভিশন সাক্ষাৎকার।

কোমির অভিযোগ, ক্রমাগত মিথ্যা বলে যাচ্ছেন ট্রাম্প এবং ন্যায়বিচারে বাধা দিচ্ছেন। এদিকে এই অনুষ্ঠান সম্প্রচারের কয়েক ঘণ্টা আগেই কোমি মিথ্যা বলছেন বলে অভিযোগ করেন ট্রাম্প। খবর এএফপি, এবিসি নিউজ।

কোমির বই বিশেষ কৌসুঁলি রবার্ট ম্যুলারের তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন রাজনৈতিক সাময়িকী পোলিটিকোর বিশ্লেষক ডারেন স্যামুয়েলসন।

অনুষ্ঠান চলাকালে উপস্থাপক জর্জ স্টেফানোপোলোস কোমিকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি মনে করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদের জন্য উপযুক্ত নন?’ কোমি জবাব দেন, ‘আমি মনে করি না প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ট্রাম্প চিকিৎসাবিদ্যার দিক থেকে অযোগ্য, বরং তিনি নৈতিকভাবে অযোগ্য। একজন রাষ্ট্রপ্রধানের অবশ্যই দেশের মূলধারার মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং মেনে চলতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সত্যবাদী হওয়া। এই প্রেসিডেন্ট এদিক দিয়ে ব্যর্থ।’

কোমি বলেন, ট্রাম্প সব সময় অনুগত লোকদেরই নিজের পাশে রাখেন। অনেকটা মব বসের মতো…কিন্তু একজন প্রেসিডেন্টের চ্যালেঞ্জ হলো যে তিনি তাঁর চারপাশে সব মতবাদের মানুষই রাখবেন। তবে যতই কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ হোক না কেন, ট্রাম্পকে ইমপিচমেন্টের মধ্য দিয়ে যেতে হবে না বলে মনে করেন কোমি।

কোমির এই সাক্ষাৎকার প্রচারের পরপরই ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বইয়ের কাটতি বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এসব বলছেন কোমি। এতে আরও বলা হয়, কোমির মধ্যে যে বিদ্বেষ রয়েছে, তার চেয়েও খারাপ হলো বই বিক্রি করার জন্য তাঁর এই বক্তব্য। কিছুদিনের মধ্যেই বাজারে আসছে কোমির লেখা বই ‘আ হায়ার লয়ালটি-ট্রুথ, লাইজ অ্যান্ড লিডারশিপ’।

২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচনী প্রচারণার সময় ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির সার্ভার হ্যাক হয়। তখন থেকেই নির্বাচনে সম্ভাব্য রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ করে আসছিলেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা রাশিয়া-ট্রাম্প যোগসাজশের এ আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্ত করছিলেন কোমি। যদিও রাশিয়া বরাবরই এই হস্তক্ষেপের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। ট্রাম্পও দাবি করে আসছেন, এর সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা নেই। ২০১৭ সালের মে মাসে হঠাৎ করে তাঁকে পদচ্যুত করেন ট্রাম্প। পদচ্যুতের বিষয়টি কোমি জানতে পারেন গণমাধ্যমের মাধ্যমে।