প্রার্থীদের প্রচারনার সরঞ্জাম ছাপাতে ব্যস্ততার ধুম পড়েছে মুদ্রণপাড়ায়

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

সিদ্দিকুর রহমান ॥ আসন্ন বিসিসি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর প্রতীক পাওয়ার সাথে সাথে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন তারা। তাছাড়া প্রার্থীরা তাঁদের ছবি ও প্রতীক-সংবলিত পোস্টার, ব্যানার আর ফেস্টুন টাঙাচ্ছেন পুরো শহর জুড়ে। আর প্রতীক বরাদ্দ হওয়ায় প্রার্থীদের প্রচারনার সরঞ্জাম ছাপাতে ব্যস্ততার ধুম পড়েছে ছাপাখানা গুলোতে। সরগরম হয়ে পড়েছে নগরীর কালিবাড়ী, ফকিরবাড়ী, সদররোড, লাইন রোডের মুদ্রণপাড়া। দিনে-রাতে সমান তালে অর্ধশতাধিকেরও বেশি ছাপাখানায় ব্যস্ত সময় পার করছে এ শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকরা। আর তাই এ শিল্পে নিয়োজিত ডিজাইনার থেকে শুরু করে কাগজ ব্যবসায়ীসহ সকলেই দিন-রাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন কাজের চাপ বেশি থাকায় বাড়তি কাজ ও বেশি পারিশ্রমিক পাওয়ার আশায় শ্রমিকরা খুব খুশি।

নগরীর ছাপাখানার মালিক ও কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় মেয়র পদে দলীয় প্রার্থীরা আগে থেকেই বেশির ভাগ প্রচারসামগ্রী প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। এখন সাধারন ওয়ার্ড এবং সংরক্ষিত আসনের প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পর ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নির্বাচনী প্রচারসামগ্রী প্রস্তুতিতে। প্রতীক বরাদ্দের সময় থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত সময় মাত্র ১৯ দিন হওয়ায় সব প্রার্থী একবারে ভিড় জমিয়েছেন ছাপাখানাগুলোতে।

নগরীর ফকিরবাড়ীর রাখাল বাবুর পুকুর পাড় সিকদার অফসেট প্রেসের মালিকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কাজের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিকই কিন্তু সেটা পূর্ববর্তী নির্বাচন গুলোর তুলনায় অনেকটা কম। যে পরিমাণ কাজ পাওয়ার কথা সে পরিমাণ হয়নি। তার পেছনে কারণ হলো প্রার্থীর সংখ্যা কম। বিশেষ করে দলীয় প্রতীকে ভোট হওয়ায় মেয়র পদ ছাড়া এবার কাউন্সিলের প্রার্থীরা সংখ্যাও কম।

এসময় তারা আরো জানান, বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের বিধি নিষেধের কারণে অনেকে পোস্টার-লিফলেট কম ছাপিয়েছেন। সঙ্গে তো রয়েছে কাগজ-কালিসহ ছাপার দাম বৃদ্ধি।

একই ছাপাখানার কর্মচারী সোহান জানান, চার-পাঁচ দিন ধরে কাজের ব্যাপক চাপ বেড়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা তাঁদের কাছে পোস্টার ও লিফলেট বানাতে আসছেন। আর এগুলো তৈরি করতে দিন-রাত কাজ করছেন মুদ্রণ শ্রমিকেরা। রাতেও কারখানাতেই থাকছেন তাঁরা। আরও কয়েক দিন এ রকম চাপ থাকবে বলে মনে করেন তিনি।

ছাপাখানার মেশিনম্যান রুবেল ও উজ্জল জানান, বছরের অন্যান্য সময় ঝিমিয়ে পড়া ছাপা ব্যবসা এ সিটি নির্বাচনকে ঘিরে জমজমাট হয়ে থাকে। তাই তাঁরা সবাই দিনরাত কাজ করে প্রার্থীদের প্রচার সরঞ্জাম পৌছে দিতে সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন।

এদিকে কথা হয় আসিফ নামে গ্রাফিকস ডিজাইনারের সাথে। তিনি বলেন বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকরা এসে ডিজাইন বলে দেয়ার পর আমার ডিজাইন করে দিই। এক এক প্রার্থীর এক এক রকম পছন্দ থাকায় ডিজাইন কয়েকবার করতে হয়। আগের চেয়ে বর্তমানে কাজের চাপ একটু বেশি। আর আয়ও বেশি।

উল্লেখ্য, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, এবং ৩০ টি ওয়ার্ডে সাধারন কাউন্সিলর পদে ৯৪ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এছাড়াও এদের মধ্যে ১৫,১৬,১৯ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন ও সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১ জন প্রার্থীর বিপরীতে কোন প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী না থাকায় তাদেরকে বেসরকারীভাবে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়েছে। এছাড়াও সাধারন আসনের কাউন্সিলরদের জন্য ১২ টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের জন্য ১০ টি সংরক্ষিত প্রতীক রয়েছে।