সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতি বিধিমালার খসড়া চূড়ান্তকরণ শেষে তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হচ্ছে। এ খসড়া নীতিমালা অনুমোদন পেলে একজন শিক্ষক পদোন্নতির সর্বশেষ ধাপে যুগ্ম-সচিব মর্যাদার তৃতীয় গ্রেডে বেতন-ভাতা পাবেন। খসড়া প্রস্তাবে প্রাথমিকের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বিভাগীয় ব্যবস্থায় ৮০ শতাংশ পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে প্রস্তাবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) থেকে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষকদের পদোন্নতির জট খুলতে নিয়োগ নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে। রোববার (৮ মে) এ খসড়ার সারাংশসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম মঙ্গলবার বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিধিমালা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এই নীতিমালা অনুমোদন পেলে ৮০ শতাংশ সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক প্রার্থীরা বিভাগীয় ব্যবস্থায় পদোন্নতির সুযোগ পাবেন। যোগ্য প্রার্থীরা বিভাগীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে পদোন্নতি পাবেন। সর্বোচ্চ পদোন্নতি পাওয়া শিক্ষকরা যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের তৃতীয় গ্রেডে বেতন-ভাতা পাবেন।
তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ থেকে অনুমোদনের পর সেটি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) পাঠানো হবে। পিএসসি থেকে একটি অবজারভেশন দেওয়া হয়। সে কারণে মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদনের পর আবারও সেখানো পাঠানো হবে। তারা সেটি চূড়ান্ত করে দেওয়ার পর তা বাস্তবায়ন হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির কিছু সুযোগ থাকলেও ঊর্ধ্বতন প্রধান শিক্ষক পদটি ব্লক পদ। সে কারণে প্রধান শিক্ষকের পদোন্নতি হয় না, আর তাই সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পান না। এছাড়া জ্যেষ্ঠতা তালিকা তৈরি করতে না পারায় পদোন্নতি পান না শিক্ষকরা।
প্রস্তাবিত নীতিমালায় নির্দিষ্ট সময় শিক্ষকরা উচ্চতর পদ ও গ্রেডে পদোন্নতির সুযোগ রাখা হয়েছে। শিক্ষকরা উপজেলা বা থানা রিসোর্স সেন্টারে দশম গ্রেড পদোন্নতি পাবেন নতুন নীতিমালা অনুযায়ী। একজন শিক্ষক পদোন্নতি পেয়ে সর্বোচ্চ তৃতীয় গ্রেডে বেতন-ভাতা পাবেন। প্রসঙ্গত, তৃতীয় গ্রেড প্রশাসনের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার গ্রেড।
জানা গেছে, এ নিয়োগ বিধিমালায় বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে ৮০ শতাংশ পদোন্নতি যেন পায় সে সুযোগ রাখা হয়েছে। সরকার নীতিগতভাবে তাতে সম্মত হয়েছে। নিয়োগবিধি পাস হয়ে গেলে ৮০ শতাংশ বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে পদোন্নতি পাবেন। এছাড়া উপজেলা রিসোর্স সেন্টার ও থানা রিসোর্স সেন্টারে দশম গ্রেডে পদ রয়েছে, সেই পদে তারা ৮০ শতাংশ পদোন্নতি পাবেন। সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ রাখা হয়েছে।
পরবর্তী নিয়োগের সময় থানা, উপজেলা, জেলা ও জাতীয় মেধাতালিকা তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম।