প্রযুক্তির কারণে পারিবারিক বন্ধন দুর্বল হচ্ছে: রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

:
: ৬ years ago

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, প্রযুক্তি উন্নয়নের বাহন। কিন্তু এ প্রযুক্তি যেন সর্বনাশের বাহন না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। মোবাইল, ফেসবুক, গেমস, মেইল ইত্যাদি নিয়েই নতুন প্রজন্ম ব্যস্ত। পাশাপাশি বসেও কেউ কারও সঙ্গে কথা বলে না। এতে করে একদিকে পারিবারিক বন্ধন দুর্বল হচ্ছে, অন্যদিকে ছেলেমেয়েরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। একারণে সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে। তাই প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সকলকে সচেতন হতে হবে।

বুধবার বিকেলে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) তৃতীয় সমাবর্তনে সভাপতির ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতি গঠনে প্রকৌশল শিক্ষার গুরুত্ব অত্যাধিক। প্রকৌশল ও প্রযুক্তি শিক্ষা একটি জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে পরিণত করে। প্রকৌশলীদের মেধা, মনন ও সৃজনশীল চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসে টেকসই উন্নয়নের রূপরেখা। তাই প্রকৌশলীদের চিন্তা ও চেতনায় থাকবে দূরদৃষ্টির সুস্পষ্ট প্রতিফলন।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে প্রতিনিয়তই প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধিত হচ্ছে এবং নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তাই আমাদের জ্ঞান ও দক্ষতাকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করে এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনে উদ্যোগী হয়ে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। বিশেষ করে আমাদের শিক্ষার প্রতিটি স্তরে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি আশা করি, আজকের এই নবীন প্রকৌশলীরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে উপলব্ধি করবে এবং তাদের সৃজনশীল চিন্তা ও প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানের বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।

সমাবর্তনে ২০১০-২০১১ থেকে ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের ২ হাজার ৭৯৫ জনকে স্নাতক ও ২২৮ জনকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী প্রদান করা হয়। এছাড়া স্নাতক পর্যায়ে ভালো ফলাফলের জন্য ‘বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক’ দেওয়া হয় ৩৮ জন কৃতি গ্রাজুয়েটকে।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আসগর। স্বাগত বক্তৃতা করেন কুয়েটের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর।

অনুষ্ঠানে কুয়েটের তিনটি অনুষদের ডিন স্ব-স্ব অনুষদের গ্রাজুয়েটদের ডিগ্রী প্রদানের জন্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের নিকট উপস্থাপন করলে রাষ্ট্রপতি তাদেরকে ডিগ্রী প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, রাজনৈতিক নেতা, অভিভাবক ও গ্রাজুয়েটসহ কুয়েটের শিক্ষক-কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবর্তন শুরুর আগে ময়মনসিংহের ভালুকায় গ্যাস বিস্ফোরণে নিহত কুয়েটের চার শিক্ষার্থীর স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।