প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে আশায় বুক বাঁধছেন বরিশালবাসী

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

বরিশাল: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী এলাকায় পায়রায় নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি উদ্বোধন করা হবে। এ জন্য কাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসছেন কলাপাড়ায়। তাঁর এ সফর ঘিরে আশায় বুক বাঁধছেন বরিশালবাসীও।

 

অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন, পদ্মা থেকে পায়রার উন্নয়ন বেগবান করতে হলে ফোর লেনের পাশাপাশি রেললাইন, অর্থনৈতিক অঞ্চল, ভোলার গ্যাসের সরবরাহ, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বরিশাল ও কুয়াকাটার মাস্টারপ্ল্যানের মতো এক গুচ্ছ মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন জরুরি।

 

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেটবিষয়ক প্রস্তুতিসভায় গত শুক্রবার বরিশাল বিভাগের নানা শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা বলেন, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করা না হলে পদ্মা সেতু, পায়রা সমুদ্রবন্দর, ভোলার প্রাকৃতিক গ্যাস বরিশালের উন্নয়ন সম্ভাবনা কাজে লাগবে না।

 

তাঁরা বরিশাল বিভাগে অপরিকল্পিত নগরায়ণ বন্ধ করে অবকাঠামো উন্নয়ন, ভোলা-বরিশালের চরাঞ্চলে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ, কৃষিপণ্য ও শস্য প্রক্রিয়া ও বাজারজাতকরণ, প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ, চার লেন সড়ক নির্মাণ এবং রেললাইন স্থাপনে জাতীয় বাজেটে কার্যকর বরাদ্দ দাবি করেন।

 

সভায় উপস্থিত অর্থনীতি সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও বরিশাল বিএম কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু টেকসই উন্নয়নে কর্মসংস্থান, শিল্পায়ন অত্যাবশ্যকীয়।

 

পদ্মা সেতু এবং পায়রা বন্দরের মাঝে উন্নয়ন দরকার। ফোর লেন, রেললাইন, কীর্তনখোলার দপদপিয়ায় বিকল্প সেতু, বরিশাল-ভোলা সেতু, ভোলার গ্যাস বরিশালে সরবরাহ, বরিশালে অর্থনৈতিক জোন সময়ের দাবি।

 

তিনি বলেন, করোনায় এ অঞ্চলের অনেক মানুষ চাকরি হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। তিনি আরও বলেন, বিভাগীয় শহর হিসেবে বরিশালে উন্নয়ন হচ্ছে না। এ জন্য বরিশাল মাস্টারপ্ল্যান ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন জরুরি।

 

বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ভোলার গ্যাস সরবরাহ করতে হবে। এতে গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান এই অঞ্চলে ঘেঁষবে।

 

নথুল্লাবাদ বাসমালিক গ্রুপের সদ্য সাবেক সভাপতি মো. ইউনুস আলী খান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে যানজট আরও বাড়বে। যানজট এড়াতে গড়িয়ার পাড় থেকে দপদপিয়া পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত করা জরুরি।

 

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের জেলা সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, ‘বরিশাল নগর হবে উন্নয়নের গেটওয়ে। কিন্তু সেই উন্নয়ন বিভাগীয় শহরে নেই। বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী তাঁর এ সফরে বরিশালবাসীকে যেন আশার আলো দেখান।’

 

নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের সিনিয়র প্ল্যানার আসাদুজ্জামান বলেন, পদ্মা সেতু আর পায়রাবন্দর চালু হলে এ অঞ্চলে শিল্পকারখানা, পর্যটন বাড়বে। এ জন্য ২০১০ সালের বরিশাল সিটি করপোরেশনের মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী নগরীর মধ্যে উন্নয়ন ও মহাসড়কের মোড়গুলো চওড়া করা প্রয়োজন।